আমার বাঁশখালী ডেক্স:
বর্তমানে কেবল যুক্তরাষ্ট্র,
যুক্তরাজ্য ও জাপানে এ মুহুর্তে ২০ লাখ প্রোগ্রামার সংকট রয়েছে। তবে
জাপানসহ ইউরোপ ও মার্কিন বাজারে তরুণ প্রজন্মের সংকট থাকায় সে সুযোগ এসেছে
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর হাতে। আর বাংলাদেশ যেহেতু বর্তমানে জনসংখ্যার
বোনাসকাল পাড় করছে, সেহেতু সে সুযোগ লুফে নেওয়ার দারুণ সুযোগ রয়েছে দেশীয়
তরুণদের।
বর্তমানে বিশ্ববাজারে কেবল বিজনেস প্রসেস
আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ
মাত্র ১৮০ মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারছে। তবে প্রযুক্তিবিদরা বলছেন,
প্রযুক্তিতে তরুণদের দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারলে বিশ্ববাজারে আগামী ২০২১
সালের মধ্যে বাংলাদেশ এক বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে।
এ বিষয়ে দেশের কল সেন্টারসমূহের
প্রতিষ্ঠান বাক্য’র সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসাইন একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে
বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বিপিও খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করা তেমন কঠিন
কিছু নয়। এ জন্য প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
দেশের তরুণদের সচেতন করতে গত ১৫-১৬ এপ্রিল
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল তৃতীয় বিপিও সামিট। এসব বিষয়ে
জানতে চাইলে তৌহিদ হোসাইন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানে এ
মুহুর্তে ২০ লাখ প্রোগ্রামারের প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তাদের সেই
তরুণ জনগোষ্ঠী নেই। কারণ জাপানে ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠী ৫০- এর ঊর্ধে। ইউরোপ
আমেরিকাতেও তরুণ প্রজন্মের সংকট বিরাজ করছে। বাংলাদেশ যদি তার বিপুল সংখ্যক
তরুণ জনগোষ্ঠীকে সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে পারে, তাহলে আগামী ৫ বছরে ইউরোপ,
আমেরিকা ও জাপানের বাজার আমাদের তরুণরাই নিয়ন্ত্রণ করবে।
বাংলাদেশের তরুণদের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে
তৌহিদ হোসাইন আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ২ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী
স্নাতক ডিগ্রি লাভ করছে। এদের বিরাট অংশ বিপিও সেক্টরে কাজ করতে পারে। যে
কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার মানুষের এখানে কাজ করার সুযোগ আছে। তাদের শুধু দুটি
যোগ্যতা থাকলেই হলো। এক. অ্যাবিলিটি টু লার্ন। অর্থাৎ আমি জানিনা কিন্তু
জানতে চাই এই মনোভাব থাকতে হবে। দুই. কমিউনিকেশন স্কিল বা যোগাযোগ দক্ষতা
থাকতে হবে।
তৌহিদ হোসাইন আরো বলেন, বিপিও খাতের
কার্যকর প্রতিফলনের মাধ্যমে ফিলিপাইন ও ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধির দেশে পরিণত হয়েছে। এ খাত থেকে ভারতের বাৎসরিক আয় ১৫০ বিলিয়ন
ডলার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে ফিলিপাইনের আয় ১৮ বিলিয়ন ডলার। জনসংখ্যা ও আয়তনে
ছোট হলেও শ্রীলংকা ইতোমধ্যে বছরে ৩ বিলিয়ন ডলার আয় করছে।
বাংলাদেশে বিপিও খাত কীভাবে কাজে লাগানো
যেতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম
কোনো না কোনো প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত। আমাদের মোট জনশক্তির দুই তৃতীয়াংশ
তরুণ। সর্বশেষ আদমশুমারি বলছে বাংলাদেশে ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মানুষের
সংখ্যা ১১ কোটি। অর্থাৎ মোট জনগোষ্ঠীর ৬৫% এর বয়স ৩৫ এর নিচে। এ ধরণের
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়া উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত
হয়েছে। আমাদের পক্ষেও সেটা সম্ভব।
বিপিও সেক্টরে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা
কেমন জানতে চাইলে তৌহিদ হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের বিপিও রপ্তানী আয়
বর্তমানে ২৩০ মিলিয়ন ডলার। এখনো পর্যন্ত এ সেক্টরে চাকরী পেয়েছে ৪০, ০০০
মানুষ। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে ২০২১ সালের মধ্যে ১ লাখ তরুণ
তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বিশ্ববাজারে বিপিও- র সম্ভাবনা নিয়ে তৌহিদ
হোসাইন বলেন, বিশ্বে বিপিও- র বাজার আছে ৪৮ হাজার কোটি ডলার। পরিসংখ্যান
বলছে ২০১৩ সালে বিপিও খাত প্রবৃদ্ধি হয় ১১ শতাংশ। রফতানি আয় হয় সাড়ে সাত
হাজার কোটি ডলারের বেশি। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থান হবে এক লাখ ৫০ থেকে এক
লাখ ৮০ হাজার মানুষের। একুশে টেলিভিশন
No comments:
Post a Comment