আমার বাঁশখালী ডেক্স:
নির্বাচনী
প্রস্তুতি ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের মোকাবেলা
করবে আওয়ামী লীগ। আর এ জন্য নিজেদের দলীয় মতবিরোধ কমিয়ে এনে সারাদেশে
নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের। সেই
সাথে ১৪ দলীয় জোটকে আরো শক্তিশালী করতে দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার
সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে বিএনপির কর্মসূচি মোকাবেলা করার
কোন সিদ্ধান্ত নেই আওয়ামী লীগের। এ জন্য পুলিশ প্রশাসনই যথেষ্ট বলে মনে
করেন তারা। এক্ষেত্রে দলের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য
নির্দেশনা রয়েছে। তবে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ
বিএনপি–জামায়াত
জোট আমলের দুর্নীতির চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে। সরকার ও দলের জনপ্রিয়তা কমতে পারে এ ধরনের কোন কার্যক্রম না করার
জন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল রোববার আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, বিএনপি
নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির
জন্য বিএনপি নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করবে। নানা কৌশল অবলম্বন করবে।
মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে আওয়ামী
লীগকেও সতর্কভাবে এগুতে হবে। মানুষের কাছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার
দুর্নীতি, তারেক রহমানের দুর্নীতি, বিএনপি–জামায়াত জোট আমলের দুর্নীতি, তৎকালীন হাওয়া ভবনের নৈরাজ্য– এসব
বিষয় মানুষের কাছে যুক্তি ও দলিলসহ উপস্থাপন করবেন আওয়ামী লীগের
নেতাকর্মীরা। এসব বিষয় দেশের মানুষের পাশাপাশি বিদেশীদের কাছেও দলের পক্ষ
থেকে তুলে ধরা হবে। এ জন্য বাংলা ও ইংরেজিতে লিফলেট, পোস্টার ও ভিডিও ডকুমেন্টারি তৈরির কাজ চলছে বলেও সূত্রগুলো জানিয়েছে।
সূত্রগুলো মনে করে, সামনে
জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে দল ও ১৪
দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। আর এ সুযোগ যাতে বিএনপি
কাজে লাগাতে না পারে এজন্য দলীয় ও জোটের নেতাদের সাথে আলোচনা করে সকল
মতবিরোধ দূর করা হবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে জেলা ও
উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ে দলের পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালন করা হবে। খালেদা
জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে, এসব কর্মসূচি কীভাবে মোকাবেলা করবে এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির
এসব কর্মসূচি দলীয়ভাবে মোকবেলা করতে গেলে সমস্যা হতে পারে। এজন্য আপাতত
তাদের কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি দেয়ার কোন সিদ্ধান্ত নেই। তবে তারা যাতে
বড় ধরনের জনসম্পৃক্ত কোন কর্মসূচি পালন করতে না পারে সে বিষয়টি অবশ্যই
পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারা কোন ধরনের সহিংসতা করলে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ
করবে। বিএনপি তাদের নেত্রীর মুক্তি ও নেতাকর্মীদের মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে
নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষে
নির্বাচনের প্রচারণা ভালোভাবে করা সম্ভব হবে না। তবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী
প্রচারণা চালিয়ে জনসমর্থন আদায়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে বলে মনে করেন দলের
নেতারা।
ইতোমধ্যে আওয়ামী
লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে। দলীয় সভাপতি ও
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটে মহাসমাবেশে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনার
মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালেও আরেকটি
নির্বাচনী সমাবেশ করেছেন। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্ভাব্য
প্রার্থীরা পোস্টার, ব্যানার ও সভা–সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তাদের এসব কর্মকাণ্ড আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
সম্প্রতি বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার সাজা নিয়ে আপাতত কম কথা বলতে
নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি নেতাদের জানিয়েছেন, খালেদা জেলে থাকা অবস্থায় এই ইস্যুতে বিএনপি জনগণের সহানুভূতি পেতে পারে, এমন
কোনও বক্তব্য বা আচরণ করা যাবে না। এমন কি নেতাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা বা
উস্কানিমূলক বক্তব্যও পরিহার করতে নির্দেশ পাঠিয়েছেন দলীয় সভাপতি। এছাড়া
মামলার দণ্ড নিয়ে অনাকাঙ্খিত কোনও বক্তব্য না রাখতে নেতাদের প্রতি
নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, ‘এই রায়কে ইস্যু করে সবাইকে সংযত হয়ে কথা বলতে হবে। সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে, খালেদা জিয়া যাতে কোনোভাবেই জনগণের সহানুভূতি পেয়ে না বসেন। বিএনপি চাইবে তার (খালেদার) মামলার রায় রাজনীতিকরণ করে সুবিধা আদায় করতে। এই সুযোগ তাদের দেওয়া যাবে না।’
সম্পাদকমন্ডলীর দুই নেতা প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার সাজা নিয়ে আমরা এমন কোনও বক্তব্য দেবো না, যা বিএনপির পক্ষে যেতে পারে। আমাদের অবস্থান হবে এটা বিচারিক বিষয়। তাছাড়া, এই মামলা গত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছে। আরঞ্জ মামলার রায় দিয়েছে আদালত। এখানে সরকারের যে কিছুই করার ছিল না, সেটা প্রতিষ্ঠিত করাই হবে আওয়ামী লীগে কৌশল। দলের সভাপতির নির্দেশনায়ও বলা হয়েছে বক্তব্য ও বিবৃতিতে এগুলোই তুলে ধরতে হবে।
সভাপতিমন্ডলীর এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই ইস্যুতে আমাদের প্রতি নির্দেশনা হলো ডোন্ট স্পিক ভেরি মাচ।’
আওয়ামী লীগের নীতি–নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত হলো বিএনপি যেহেতু খালেদা জিয়ার দন্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাবে, সেখানে
আওয়ামী লীগকে প্রমাণ করতে হবে এই দন্ড দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালতের। এখানে
রাজনৈতিক কোনও স্বার্থ নেই। এই লাইনে সবাইকে কথা বলতে হবে এবং বিএনপির
মিথ্যাচারকে মিথ্যা প্রমাণ করতে হবে। তাই সতর্কভাবে সবাইকে কথা বলতে হবে।
নেতারা আরও বলেন, খালেদা জিয়া জেল থেকে বের হলে দুর্নীতিবাজ ও দন্ডিত ব্যক্তির রাজনীতি করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রচার চালাতে হবে আওয়ামী লীগকে।
জানা গেছে, খালেদা
জিয়ার মামলার রায় ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও
প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ কড়া ভাষায় সমালোচনা করে সংবাদ সম্মেলন করার
প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ আসার পর সংবাদ
সম্মেলনে সতর্কতা অনুসরণ করে বক্তব্য রাখেন নেতারা।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নীতি–নির্ধারণী মহল মনে করে, খালেদার
সাজা হলেও জামিনে বের হয়ে আসবেন তিনি। ফলে বের হয়ে আসার পরে বিএনপির
নেতাদের প্রতিক্রিয়া বুঝে পাল্টা প্রতিক্রিয়া প্রদান করবেন ক্ষমতাসীন দলের
নেতারা।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও খালেদা জিয়ার কারাদন্ডের রায় নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখাতে নেতাকর্মীদের বারণ করেছেন ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার নয়, রায় দিয়েছে আদালত। নেতাকর্মীদের বলব, এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। মারামারি, লাফালাফি, দাপাদাপির কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা ঠান্ডা মাথায়, সতর্কভাবে, রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করব। বিএনপির বিক্ষোভ সহিংস হলে ‘পুলিশ তা মোকাবেলা করবে’ বলে জানান তিনি। দৈনিক আজাদী
নিউজ এর উপরে বিজ্ঞাপন
Monday, February 12, 2018
নির্বাচন ও চলমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় যেভাবে এগুতে চায় আওয়ামী লীগ
Tags
# আওয়ামী লীগ
# রাজনীতি
Share This
About amarbanskhali.blogspot.com
রাজনীতি
Marcadores:
আওয়ামী লীগ,
রাজনীতি
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
পোস্টের নীচে বিজ্ঞাপন
সম্পাদকীয় কথা
প্রিয় পাঠক,
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও প্রতিনিধিরা নিউজ পাঠান
ই-মেইল: amarbanskhali@gmail.com
প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ্ ও প্রকাশক এম.ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদ নিচে আপনার মতামত লিখুন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও প্রতিনিধিরা নিউজ পাঠান
ই-মেইল: amarbanskhali@gmail.com
প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ্ ও প্রকাশক এম.ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদ নিচে আপনার মতামত লিখুন
No comments:
Post a Comment