শতাধিক পুলিশের উপস্থিতিতে মাস্তান মামার ‘খানকা’ উদ্বোধন, পুলিশ-প্রধানের শুভেচ্ছা !
আমার বাঁশখালী ডেক্স:
চট্টগ্রামে পুলিশ প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ মোহাম্মদ এয়াকুব মাস্তান আল চিশতি ওরফে মাস্তান মামার সেই ‘খানকা শরীফের’ উদ্বোধন হয়েছে। এ উপলক্ষে সাইনবোর্ড লাগিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক; এ বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমছড়া খাজানগর এলাকায় খানকা শরীফটি উদ্বোধন করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের আজমীর শরীফের খাস খাদেম হাজী সর্দার সৈয়দ এস.এম জুনায়েদ মিয়া চিশতী, পিএইচপি ফ্যামেলির চেয়ারম্যান সুফি মো. মিজানুর রহমান, এয়াকুব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিল্পপতি এম. এয়াকুব আলী প্রমুখ।
এ ছাড়া পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস.এম. মনিরুজ্জামান ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহার প্রমুখ উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন।
কয়েকজন ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরের প্রায় সব ওসি ও সব ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) খানকা শরীফ দেখতে যান শুক্রবার। সে সুবাদে একদিনে অসংখ্য পুলিশ কর্মকর্তার গাড়ি দেখতে পান বরুমছড়া গ্রামের মানুষেরা। তবে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এসপিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সেখানে দেখা যায়নি। শুক্রবার বিকালে নগরের হালিশহর পুলিশ লাইন্সে কাবাডি টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা; সেখানে জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খানকা শরীফের দেয়ালে টাঙানো একটি ডিজিটাল ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির পাশে মাস্তান মামার ছবি জুড়ে দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘আশেকে খাজা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
এদিকে অজপাড়া গাঁয়ে একটা খানকা উদ্বোধনে পুলিশ প্রধানের শুভেচ্ছা ও চট্টগ্রামের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, আইজিপির সাথে তোলা ছবি ও শুভেচ্ছা প্রচার করে মাস্তান মামা মূলত মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও এলাকাবাসীকে তার প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং আইজিপির সাথে তার ঘনিষ্ঠতা সর্ম্পকে জানান দিয়েছেন।
খানকা উদ্বোধন উপলক্ষে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে লক্ষ করা গেছে। সেখানে একশ’ সাধারণ মানুষের উপস্থিতি না থাকলেও পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ কমিশনারসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী ছাড়া স্থানীয় উল্লেখযোগ্য তেমন কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
পুলিশ কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য ছিল হরেক রকমের স্পেশাল খাবার। খানকা’র দ্বিতীয় তলায় অত্যাধুনিক গেস্ট রুমে ডিআইজি, পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশ্রাম ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। তৃতীয় তলায় অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ ছিল। খানকা’র ছাদে কিছু অনুসারীদের জন্য সাধারণ মানের বিরাণীর ব্যবস্থা করা হয়। খানকা প্রসঙ্গে স্থানীয়দের বলতে শোনা গেছে, এটা মাস্তান মামার ‘পুলিশ খানকা’।
(গরীবে নেওয়াজ নামেও পরিচিত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে কিংবদন্তিতুল্য একজন ঐতিহাসিক সুফি ব্যক্তিত্ব। তিনি ১১৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ও ১২৩৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।)
চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসনে মাস্তান মামা নামে পরিচিতি পাওয়া ওই ব্যক্তির প্রকৃত নাম মোহাম্মদ এয়াকুব। পরে নামের সঙ্গে ‘মাস্তান আল চিশতি’ যোগ করেছেন তিনি। মাস্তান শব্দটি দিয়ে ‘দরবেশ’ বোঝানো হয় আর তিনি হলেন চিশতি ধারার অনুসারী। কিছু পোস্টারে নিজেকে চিশতিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন মোহাম্মদ এয়াকুব মাস্তান আল চিশতি।
সূত্র: একুশে পত্রিকা
ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন: https://www.youtube.com/watch?v=XvioASL1m5Q#action=share
This comment has been removed by a blog administrator.
ReplyDelete