আমার বাঁশখালী ডেক্স:
অবশেষে আরো ৫টি শয্যা (বেড) যুক্ত হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) বিভাগে।
অতিরিক্ত এই ৫টি আইসিইউ শয্যার বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও
পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় হতে এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার কথা
জানিয়ে আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন। হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে বর্তমানে ১২টি শয্যা রয়েছে। নতুন করে ৫টি যুক্ত হলে এ সংখ্যা ১৭টি–তে উন্নীত হবে। তবে স্থান সংকটের কারণে অতিরিক্ত ৫টি শয্যা স্থাপনে হিমশিম অবস্থায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতাল প্রশাসনকে।
যদিও এসব শয্যা স্থাপনে আপাতত দুই ধরনের চিন্তা–ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন।
পরিচালক বলেন, আমরা সবাই জানি, বৃহত্তর চট্টগ্রামের কয়েক কোটি মানুষের জন্য এই হাসপাতালটি–ই ভরসাস্থল। বিশেষ করে গরীব–অসহায় রোগী ও মুমূর্ষু রোগীদের জন্য। ফলে এখানে একটি আইসিইউ শয্যা বাড়াতে পারাটাও বিশাল ব্যাপার। তাই স্থান সংকট থাকলেও যে করেই হোক, আমরা অতিরিক্ত ৫টি শয্যা স্থাপনের চিন্তা–ভাবনা করছি। একটি উপায় আমরা খুঁজে বের করবোই। হাসপাতাল প্রশাসনের তথ্য মতে– বর্তমান আইসিইউ বিভাগেই যে কোন ভাবে জায়গা ম্যানেজ করা যায় কিনা, তা দেখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেটি সম্ভব না হলে বিকল্প উপায়ের কথাও ভাবছে প্রশাসন।
এই বিকল্প ভাবনায় রয়েছে– অতিরিক্ত পাওয়া ৫টি আইসিইউ শয্যা হাসপাতালের নির্দিষ্ট দুটি ওয়ার্ডে (যে দুটি ওয়ার্ড থেকে বেশি সংখ্য রোগী আইসিইউ–তে পাঠানো হয়) স্থাপন করা যায় কিনা, তা নিয়ে চিন্তা–ভাবনা। হাসপাতালের নিউরো–সার্জারি ও নিউরো–মেডিসিন ওয়ার্ড থেকেই বেশি সংখ্যক রোগী আইসিইউতে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন আইসিইউ বিভাগের চিকিৎসকরা। এদিকে, আলাদা ভাবে দুটি ওয়ার্ডে আইসিইউ শয্যা চালু করাটা সহজ নয় বলে মনে করেন আইসিইউ বিভাগের চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন– আইসিইউ
সেবা এক ধরণের টিমগত কাজ। এর জন্য আলাদাভাবে অ্যানেসথেসিষ্টসহ প্রশিক্ষিত
জনবল প্রয়োজন। যা অন্য ওয়ার্ডগুলোতে নেই। তাই যে কোন ওয়ার্ডে শুধু আইসিইউ
শয্যা স্থাপন করে দিলেই এর সুফল পাওয়া যাবে না। কঠিন হলেও বর্তমান আইসিইউ
বিভাগে জায়গা সংস্থান করে শয্যাগুলো স্থাপন করাটাই উর্পযুক্ত সিদ্ধান্ত হতে
পারে বলে অভিমত চিকিৎসকদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা
করে উত্তম উপায়টি (যেটি ভালো হয়) বেছে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন।
হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়– ৫টি আইসিইউ শয্যার জন্য যাবতীয় সরঞ্জাম (বেড, ভেন্টিলেটর ও মনিটরসহ) ক্রয়ের
লক্ষ্যে অর্থ বরাদ্দ মঞ্জুর করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের চিঠি হাতে পায় চমেক হাসপাতাল প্রশাসন।
চিঠি সূত্রে জানা যায়– সব মিলিয়ে চমেক হাসপাতালের বিপরীতে প্রায় ১৬ কোটি (১৫ কোটি ৮০ লাখ) টাকা
অর্থ বরাদ্দ মঞ্জুর করা হয়েছে। যাতে ৫টি আইসিইউ শয্যার বাইরে অন্যান্য
চিকিৎসা সরঞ্জামও রয়েছে। এর মধ্যে সিটি স্ক্যান ও এনজিওগ্রামসহ আরো কয়েকটি
অতি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রযের অর্থ বরাদ্দও মঞ্জুরের তথ্য
উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ ৫টি অতিরিক্ত আইসিইউ শয্যার পাশাপাশি নতুন সিটি
স্ক্যান ও এনজিওগ্রাম মেশিনও পাচ্ছে চমেক হাসপাতাল। অর্থ বরাদ্দ মঞ্জুর
হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে
হাসপাতাল প্রশাসন। ক্রয় পরবর্তী এসব সরঞ্জাম হাসপাতালে পৌছাঁনোর দায়িত্ব
এখন কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) বলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, মুমূর্ষু রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য আইসিইউ কেবল ভরসাস্থলই নয়, অপরিহার্যও। কৃত্রিম শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে মুমূর্ষূ রোগীদের এখানে বাচিঁয়ে রাখা হয়, বাচিঁয়ে
তোলা হয়। কিন্তু বৃহত্তর চট্টগ্রামের চিকিৎসা সেবায় গরীবের একমাত্র
ভরসাস্থল হিসেবে পরিচিত চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে শয্যা সংখ্যা মাত্র
১২টি। ভেন্টিলেটর নষ্ট হলে এর মধ্যে ৪/৫টি শয্যাই প্রায়সময়ই অকেজো হয়ে পড়ে। অর্থাৎ মুমূর্ষূ রোগীর ভরসাস্থল আইসিইউ বিভাগটি নিজেই মুমূর্ষূ হয়ে পড়ে প্রায় সময়। অথচ, হাসপাতালে দৈনিক কম হলেও একশ মুমূর্ষূ রোগীর জন্য আইসিইউ শয্যার আবেদন–অনুরোধ আসে। আর সাধারণ আবেদনকারীর পাশাপাশি অনুরোধকারীর কাতারে থাকেন মন্ত্রী–এমপি এবং সচিবরাও। কিন্তু শয্যা সংকট তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন সংকটে যে কয়টি আছে তাতেও ঠিকমতো সেবা দিতে অপারগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশ্য, হাসপাতালের
পক্ষ থেকেও অতিরিক্ত আরো দুটি ভেন্টিলেটর ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে
জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন। প্রতিটি প্রায় ২৫ লাখ টাকা দরে দুটি ভেন্টিলেটর ক্রয়ের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগ সূত্রে জানা যায়– প্রতিটি আইসিইউ শয্যায় একটি করে ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম শ্বাস–প্রশ্বাসদানের যন্ত্র) থাকে।
এই ভেন্টিলেটর ছাড়া মূলত আইসিইউ সেবা অকার্যকর। কিন্তু প্রায় সময়ই কয়েকটি
ভেন্টিলেটর অকেজো হয়ে পড়ে। আর ভেন্টিলেটর নষ্ট হলে ওই সব শয্যায় আইসিইউ
সেবাও বন্ধ থাকে। এতে করে গরীব–অসহায় রোগীরা এই আইসিইউ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। কারণ, নগরীর প্রাইভেট হাসপাতাল–ক্লিনিকগুলোতে আইসিইউ সেবা নিতে হলে দৈনিক ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ফি গুনতে হয় রোগীর পরিবারকে। যা গরীব–অসহায় পরিবারের পক্ষে বহন করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। ফলে মুমূর্ষু আইসিইউ’র মতো ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয় এসব অসহায় রোগীদের।
এ নিয়ে একাধিকবার
প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দৈনিক আজাদীতে। স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সচিবের দৃষ্টি
আর্কষণও করা হয়। সর্বশেষ চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে চমেক হাসপাতালের
আইসিইউ বিভাগটি ২০ শয্যায় উন্নীত করণে যা যা করা দরকার তা দ্রুত করার জন্য
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী
মোহাম্মদ নাসিম। গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে স্বাস্থ্য
কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভা থেকে মুঠোফোনে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তাদের এ নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রীর এ
নির্দেশের পর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ৫টি আইসিইউ শয্যাসহ অন্যান্য
চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ চমেক হাসপাতালের বিপরীতে প্রায় ১৬ কোটি টাকার
অর্থ বরাদ্দ মঞ্জুর করলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
দৈনিক আজাদী
নিউজ এর উপরে বিজ্ঞাপন
Monday, February 12, 2018
চমেক হাসপাতালে যুক্ত হচ্ছে আরো ৫টি আইসিইউ বেড
Tags
# চট্টগ্রাম
# সারা বাংলা
Share This
About amarbanskhali.blogspot.com
সারা বাংলা
Marcadores:
চট্টগ্রাম,
সারা বাংলা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
পোস্টের নীচে বিজ্ঞাপন
সম্পাদকীয় কথা
প্রিয় পাঠক,
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও প্রতিনিধিরা নিউজ পাঠান
ই-মেইল: amarbanskhali@gmail.com
প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ্ ও প্রকাশক এম.ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদ নিচে আপনার মতামত লিখুন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও প্রতিনিধিরা নিউজ পাঠান
ই-মেইল: amarbanskhali@gmail.com
প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ্ ও প্রকাশক এম.ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদ নিচে আপনার মতামত লিখুন
No comments:
Post a Comment