আমার বাঁশখালী ডেক্স:
ভারতের কেরালার এক কলেজ শিক্ষিকার
বিতর্কিত মন্তব্যে উত্তাল কেরালা। নিজ কলেজের ছাত্রীদের যথাযথ পর্দাশীল
পোষাক পরিধান না করা নিয়ে তার এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে এখন রাজপথে নেমেছেন
কেরালার নারীরা। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এখন তা ‘টক অব দ্য টাউন’।
জৌহর মুন্নাভি কেরালার ঐ কলেজের
সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা। কলেজটির ৮০ শতাংশ ছাত্রী মুসলাম। মুন্নাভি নিজেও
মুসলাম। একজন নারী হয়ে, শিক্ষিকা হয়ে তারই ছাত্রীদের বিরুদ্ধে করা
মন্তব্যের জন্যই বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশজুড়ে।
নিজের ছাত্রীদের উদাহরণ দিয়ে সম্প্রতি এক
ভাষণে তিনি বলেন, “তারা (ছাত্রীরা)পর্দা করে ঠিকই, তবে তার নীচে লেগিংসও
পড়ে। অনেক সময়ে পর্দাটা একটু তুলে আবার লেগিংসও দেখায়ও। মুফতাহ-র কথা তো
ছেড়েই দিন। একটা শাল জড়িয়ে নেয় - যাতে বুকের কিছুটা অংশ দেখা যায়।"
নারীদেহের প্রতি পুরুষের আকর্ষণের জন্য
নারীদেরই দোষ দেন মুন্নাভি। তিনি আরও লেখেন, “পুরুষমানুষের কাছে নারীদের
বুক একটা আকর্ষণের জায়গা। সেজন্যই ঢেকে রাখা উচিত সেটা। কিন্তু আমাদের
মেয়েরা বুকের একটা অংশ প্রদর্শন করি। আমরা যেমন তরমুজটা পাকা কী না সেটা
দেখার জন্য যেমন একটু কেটে দেখে নিই, সেরকমভাবেই যেন ছাত্রীরা বোঝাতে চায়
শরীরের বাকিটাও ওই অংশটার মতোই"
মি. মুন্নাভির এসব কথা বলেছিলেন যে
মুসলমান নারীদের পর্দা করা কতটা আবশ্যক এবং তারা যেভাবে পর্দা করে, সেটা যে
অ-মুসলিম কায়দা, সেটা বোঝানোর জন্য।
ফারুক ট্রেনিং কলেজের ওই অধ্যাপকের এমন
মন্তব্য সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তারপরেই যেমন
রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ছাত্র সংগঠনগুলি; তেমনই ক্ষুব্ধ
প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমেও।
উমা নামের এক টুইট ব্যবহারকারী ওই ঘটনার কথা তুলে ধরে বলেছেন "মুসলিম পুরুষদের উচিত এই লোকটাকে চাবকানো।"
ফেমিনিচি স্পিকিং নামের আরেকজন টুইট করে ওই অধ্যাপককে `ব্রেস্ট অবসেসর` নামে অভিহিত করে বলেছেন, "নারীদের স্তন তাদের শরীরের অংশ।"
অনেক নারীই আবার তাদের উন্মুক বক্ষযুগলের ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে মুন্নভির এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
ছাত্রীদের সম্পর্কে কী করে একজন অধ্যাপক
এরকম অশালীন মন্তব্য করতে পারেন? এটাও জানার ছিল যে তিনি কী তাহলে
ছাত্রীদের পোশাকের দিকেই নজর রাখেন?
সেটা জানতে এই অধ্যাপিকার সাথে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
ফারুক ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ ড. সি. এ.
জৌহর স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, “যে বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে,
সেটি বেশ কিছুদিনের পুরনো। ঐ অধ্যাপক কলেজের ছুটির সময়ে নানা জায়গায়
কাউন্সেলিং করান। সেরকমই কোনও জায়গায় ওই ভাষণ দিয়েছেন তিনি”।
“আর কলেজ চত্বরের বাইরে যেহেতু ঘটনা এটি, কোনও ছাত্র-ছাত্রী অভিযোগও জানায় নি, তাই কলেজের এ ব্যাপারে কিছু করার নেই”।
সূত্র: বিবিসি
No comments:
Post a Comment