আমার বাঁশখালী ডেক্স:
কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি
সোনিয়াগান্ধী অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি দেশটিতে ধর্মীয় বিভেদ
সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, গত নির্বাচনসহ ভারতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত
নির্বাচনে কংগ্রেসকে মুসলিম পার্টি হিসেবে তুলে ধরেছে ক্ষমতাসীন দলের
নেতাকর্মীরা। আর এতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা কংগ্রেস থেকে
কিছুটা দূরে সরে গেছে বলে মনে করেন ভারতীয় রাজনীতির সবচেয়ে পুরোনো দলের এ
নেত্রী।
এদিকে গুজরাটসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের
নির্বাচনের পূর্বে রাহুল গান্ধীর বেশ কয়েকটি মন্দির সফরকে আইওয়াশ বলে ঘোষণা
করেছে বিজেপি। বিজেপি দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে,আর বলেছে রাহুল হিন্দু ধর্মে
বিশ্বাসী না, সে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। আর রাহুলের হঠাৎ করে মন্দিরমুখী
হওয়াকে রাজনৈতিক গুটিবাজি বলে ভোটারদের কাছে তুলে ধরে বিজেপি। এতে
নির্বাচনে তুলনামূলক কম ভোট পায় কংগ্রেস।
ভারতের মধ্যম বামপন্থীদের জোট ইউনাইটেড
প্রোগ্রেসিভ অ্যাসোসিয়েশনের (ইউপিএ) সভাপতি সোনিয়া গান্ধী এক সভায় বক্তব্য
দিতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘বিজেপি সুকৌশলে আমাদেরকে
মুসলিম দল হিসেবে তুলে ধরেছে। বিষয়টি আমরা বুঝতে পারিনি। তবে আমাদের দলে
মুসলমানরা আছেন সত্য, তবে এখনো দলে হিন্দুদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা সবচেয়ে বেশি।
তবে আমি বুঝতে পারিনি তাদের ব্রান্ডিং আমদের মুসলিম দল হিসেবে তুলে ধরবে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে মধ্য-বামপন্থীদের সমন্বয়ে ইউপিএ কংগ্রেসের নেতৃত্বে
ইউপিএ জোট গঠিত হয়। সেখানে ভারতের সবচেয়ে বড় মুসলিম দলও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
এদিকে রাহুল গান্ধীর ঘনঘন মন্দির ভ্রমণকে
কোন রাজনৈতিক কার্যকলাপের অংশ হিসেবে মানতে নারাজ সোনিয়া গান্ধী। সোনিয়া
বলেন, রাজিব গান্ধী বেঁচে থাকতেও, আমরা মন্দিরে গিয়েছি। এমনকি কোন জায়গায়
সফরের যাওয়ার আগেও আমরা মন্দিরে যেতাম। তবে সেটা একান্তই পারিবারিকভাবে।
ঢাকঢোল পিটিয়ে কখনো মন্দিরে যাইনি। রাহুল কেবল নির্বাচনের আগে নন, সে সব
সময় মন্দিরে যেতেন। তবে মন্দিরে যাওয়াটা আমাদের কাছে কোন রাজনৈতিক
কার্যক্রমের অংশ না। যেমনটা বিজেপি করে থাকে।
এদিকে বিজেপির নেতৃত্বে করা ন্যাশনাল
ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এর তুমুল সমালোচনা করেন সোনিয়া গান্ধী।
১৯৯৮ সালে বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ গঠিত হয়। ভারতের মধ্য-ডানপন্থীদের
সমন্বয়ে এনডিএ গঠিত হয়। সোনিয়া অভিযোগ করে বলেন, এনডিএ আমাদের রাষ্ট্রের
ভিত্তি নষ্ট করে দিচ্ছে, আমাদের জাতীয়তাবাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ
ছাড়া বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কাজে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে
ব্যবহারের অভিযোগ আনেন কংগ্রেসের সাবেক এ নেত্রী।
এদিকে বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের বেশ
কয়েকটি স্তম্ভও রাজনীতিকরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সোনিয়া। এসময় তিনি
বলেন, আজকে বিচার বিভাগে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, সুশীল সমাজ নীরব হয়ে
পড়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবিয়ে রাখা হয়েছে, বেশিরভাগ
গণমাধ্যমমে নজরদারির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এসময় তিনি বলেন
এদিকে আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে রুখতে
স্থানীয় দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। শুধু সব
দল মধ্যপন্থীদল ঐক্যবদ্ধ হলে বিজেপিকে ২০১৯ সালের নির্বাচনে পরাজিত করা
সম্ভব বলে মনে করেন প্রবীণ এ নেত্রী।
সূত্র: জিনিউজ
No comments:
Post a Comment