আমার বাঁশখালী ডেক্স:
একনেক সভায় মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে
মোট ৯ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন হবে মোট ৯ হাজার ৫৯১
কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২০ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক
সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পমন্ত্রী আ হ ম
মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু যেমন স্বপ্নের প্রকল্প তেমনি পায়রা গভীর সমুদ্র
বন্দরও। এটা অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প। এ প্রকল্পে ৬০৫৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ
করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণবাসনে ৪৯৩.০৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের অংশ হিসেবে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম
পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় তিন
হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যার পুরোটাই সরকারের (জিওবি)।
পায়রা সমুদ্রবন্দর পূর্ণ উদ্যমে চালুকরণ এবং আমদানি-রফতানি পণ্যের অবাধ
পরিবহনের লক্ষ্যে একটি প্রশাসনিক ভবন, ওয়্যার হাউস নির্মাণসহ পাইলট বোট,
টাগ বোট, বয়া লেইয়িং ভেসেল, সার্ভে বোট এবং নিরাপত্তা যন্ত্র সামগ্রী
সংগ্রহ এবং বন্দর টার্মিনাল থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী- কুয়াকাটা ভারতীয় মহাসড়ক
পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ শেষে বাকি থাকবে সমুদ্র ড্রেজিং। এর জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।
প্রকল্পের পটভূমিতে জানা গেছে- ২৯ অক্টোবর ২০১৫ সালের একনেক সভায় এক
হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পায়রা বন্দর প্রথম অনুমোদন দেয়া হয়।
বর্তমানে ১৬ একর জমির উপর সীমিত ভৌত অবকাঠামো সুবিধাদি যেমন –পল্টুন,
ক্রেইন, নিরাপত্তা ভবন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা উন্ননের মাধ্যমে একটি বন্দর
টার্মিনাল তৈরি হলেও এখনও নিয়মিতভাবে পণ্য উঠা-নামা ও খালাস করা হচ্ছে না।
তবে পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা গড়ে না উঠা পর্যন্ত বহিঃনোঙ্গরে বাণিজ্যিক জাহাজ
আনয়নের মাধ্যমে ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম শুরু হয়।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে অবস্থিত
পায়রা বন্দর দেশের তৃতীয় ও দক্ষিণ এশিয়ার একটি অন্যতম সামুদ্রিক বন্দর।
অবস্থানগত কারণে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অন্য প্রকল্পগুলো হলো- সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে (তিন পার্বত্য
জেলা) এক হাজার ৬৯৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, জেলা মহাসড়ক প্রশস্ততায় উন্নীতকরণে
(ঢাকা জোন) ৫৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, ভবের চর –গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক
প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পে ৮০ কোটি ছয় লাখ টাকা, সিলেট সিটি
কর্পোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণে ৫৪৭ কোটি ২৮ লাখ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা
কার্যালয়ের ২০তলা বিশিষ্ট দু’টি বেইজমেন্টসহ ১০তলা (সংশোধিত ২০তলা) প্রধান
কার্যলয় নির্মাণ কাজে (১ম সংশোধিত) ২৪৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা প্রথমে ছিল
৮৭কোটি ৯৯ লাখ টাকা, নোয়াখালী সদরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচাবীদের জন্য
আবাসিক ভবন নির্মাণ ২১৯ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ডাক অধিদফতরের সদর
দফতর নির্মাণ (সংশোধিত) ৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা প্রথমে ৫৪ কোটি ৭২ লাখ
টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল, ভোলার চরফ্যাশনের তেতুঁলিয়া নদীর ভাঙন রোধে বকসী
লঞ্চঘাট থেকে বাবুরহাট পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ও ড্রেজিং এবং কুকরী–মুকরি
দ্বীপে বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ৫২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, বিএডিসির উদ্যান
উন্নয়ন বিভাগের সক্ষমতা প্রকল্প বৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্যান জাতীয় ফসল সরবরাহ ও
পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্প ১১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা, এক্সপারশন অব
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসয়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল প্রকল্পে ৪২০ কোটি ৩৮
লাখ টাকা, ভূমি জরিপ উন্নয়ন প্রকল্প ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, সরকারের জন্য
নিরাপদ ই-মেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্প ১১৬ কোটি ৩১ লাখ
টাকা, ‘শেখ হসিনা বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা’
প্রকল্প (সংশোধিত) ৯১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা, এটা প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার
কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে ‘ জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট
স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ৫২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জানুয়ারি ২০১৬ থেকে
ডিসেম্বর ২০১৮ মেয়াদে বস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায়
অনুমোদন হয়। পরবর্তিতে নাম পরিবর্তন করে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও
প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা’ করা হয়। প্রকল্প এলাকা ঢাকা
মেট্রোপলিটন সিটি, ঢাকা।
No comments:
Post a Comment