আমার বাঁশখালী ডেক্স:
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক 
ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে 
২০১৭ সাল পর্যন্ত সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের অনেক পরিবর্তন 
হয়েছে। ব্যাংকের কর্মীদের ব্যাপক হারে সাইবার নিরাপত্তা এবং সফটওয়্যার 
প্রশিক্ষণ বেড়েছে। তবে এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকে
 পুরোপুরি আইটি গভার্নেন্স নেই। এর মধ্যে ৮ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভার্নেন্স 
বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ৬০ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভার্নেন্স 
বাস্তবায়নের কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে 
২২শতাংশ ব্যাংকে। ফলে আইটি অবকাঠামো, নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছে 
ব্যাংকগুলো। এ অবস্থা উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি গাইড লাইন অনুসরণ 
করার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম 
অডিটোরিয়ামে ‘ আইটি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপিত 
গবেষণা প্রতিবেদনে এ  কথা বলা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন 
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান 
আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা 
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, সাবেক 
ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক 
এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ 
ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক 
ইয়াছিন আলি, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী 
কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক 
এ.কে.এম. ফজলুল হক মিয়া, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক 
এস এম মাঈনুদ্দিন চৌধুরী, স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের কান্ট্রি টেকনোলজি 
অফিসার মনিতুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন 
বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক শিহাব উদ্দিন খান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন 
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের
 ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা: 
রাজী হাসান বলেন, সারা বিশ্বেই সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে 
ব্যাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এতে যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকটি বিবেচনায় 
বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এরই মধ্যে আইসিটি গাইড লাইন দিয়ে দিয়েছে 
ব্যাংকগুলোকে। যা বাস্তবায়নের দিকটি তদারকি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো 
মানের সফটওয়্যার তৈরি করছে। এগুলো ব্যাংক ব্যবহারে উদ্যোগ নিতে পারে। এরই 
মধ্যে দেশের ব্যাংকগুলোর একটি বড় অংশ দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করেছে। 
বিদেশী সফটওয়্যার ব্যবহারে খরচের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় অনেক ঝামেলা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্ণর 
নাজনিন সুলতানা বলেন, যোগাযোগের অভাবে এক ব্যাংকের সমস্যা অন্যরা জানতে 
পারছে না। ফলে একই দুর্ঘটনা অন্য ব্যাংকেও ঘটছে। নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলো 
আলোচনা করলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে। এছাড়াও আইটি নিরাপত্তায় অভিজ্ঞ 
জনশক্তি তৈরি অত্যন্ত জরুরি। এখন ব্যাংকের সব কর্মকর্তা এবং গ্রাহক 
পর্যায়েও সচেতনতা সৃষ্টির সময় এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক একেএম
 ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমান হার্ডওয়ার এবং সফটওয়ার 
প্রকৌশলী তৈরি হয়েছে। তাদের একটু প্রশিক্ষণ দিলেই দেশের কাজে লাগানো সম্ভব।
 প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের আইটি বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে 
হবে। প্রয়োজনে তাদের বিদেশে নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক 
এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং
 এখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সরাসরি ব্যাংকিং খাতের সাথে মোবাইল 
ব্যাংকিংয়ের এই প্রতিযোগিতা ঝুঁকি তৈরি করবে। শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের সব
 জায়গাতেই সাইবার ক্রাইম হচ্ছে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে এই জায়গাতে আমাদের গুরুত্ব
 দিতে হবে।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা 
পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, 
ব্যাংক খাতে সাইবার ক্রাইম ঠেকাতে অভিজ্ঞ অডিট কর্মকর্তার প্রয়োজন। অভিজ্ঞ 
জনশক্তি তৈরিতে নির্দিষ্ট বাজেট থাকা দরকার। কারণ প্রশিক্ষণের জন্য ধার্য 
বাজেট অপচয় নয় বরং বিনিয়োগ। 
 একুশে টেলিভিশন
স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের কান্ট্রি 
টেকনোলজি ম্যানেজার মনিতুর রহমান বলেন, সাইবার ক্রাইম থেকে বাঁচতে আমরা 
ক্লাউড সুবিধা নিতে পারি। ক্লাউড সুবিধা গ্রহণ করলে খরচটাও অনেক কমে আসবে।
সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা 
পরিচালক এস এম মাঈনুদ্দিন চৌধুরি বলেন, আইটি নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকিং খাত 
পুরোপুরি অটোমেটেড করতে হবে। এতে ঝুঁকি আরো কমে যাবে।
 

 
 

 
 
 
 
 
 
 
 


No comments:
Post a Comment