কুমিল্লায় ধরা পড়ল অনিক হত্যা দু্মই মলার আসামী আপন ভাই - আমার বাঁশখালী ডটকম AmarBanskhali.Com

ব্রেকিং নিউজ

শীর্ষ বিজ্ঞাপন

নিউজ এর উপরে বিজ্ঞাপন

Wednesday, June 27, 2018

কুমিল্লায় ধরা পড়ল অনিক হত্যা দু্মই মলার আসামী আপন ভাই


চট্টগ্রাম নগরীর চট্টেশ্বরী রোডে ছুরিকাঘাতে নিহত অনিক হত্যা মামলার আসামি মহিউদ্দিন ও এখলাসুর ভারতে ধরা পড়ার পর এবার কুমিল্লা থেকে ধরা পড়ল এ মামলার আরো দুই আসামি জোনায়েদ আহম্মদ ইমন (১৯) ও জোবায়েদ আহম্মদ শোভন (২২)।

মঙ্গলবার দুপুরে এ উপলক্ষে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান ঘটনা ও আসামিদের প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন তুষার ও এখলাসুরকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন সংবাদ আসে অনিক হত্যা মামলার আরো দুই আসামি কুমিল্লা থেকে ধরা পড়েছে। তারা দুজন আপন ভাই। এদের মধ্যে বড় ভাই শোভন ঘটনার দিন প্রথম অনিককে ছুরিকাঘাত করে বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। এ নিয়ে অনিক হত্যার ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার হলো।
কলকাতা থেকে ধরা পড়া হত্যা মামলার মূল আসামি মহিউদ্দিন প্রকাশ তুষার প্রসঙ্গে কমিশনার জানান, সে ও এখলাসুর ভারত হয়ে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কয়েক দিন দেরি হলেই তারা সেখান থেকে মালয়েশিয়া পালিয়ে যেত। কলকাতা পর্যন্ত যেতে পারলেও পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় সেখানে তারা ধরা পড়ে এবং তাদের চট্টগ্রামে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ) গত শুক্রবার ফ্রি স্ট্রিট স্কুল এলাকা থেকে মহিউদ্দিন তুষার ও এখলাসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। মহিউদ্দিন তুষার মামলার প্রধান ও এখলাসুর রহমান ১০ নম্বর আসামি।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার মাহাবুবর বলেন, ঘটনার পরপর তারা দুজন বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারতীয় পুলিশের মধ্যে চিঠি চালাচালির পর দুই আসামির ভিসা বাতিল করে ভারতীয় পুলিশ। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে দুই আসামিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ফেরত নিয়ে আসি। ইতোপূর্বে এত দ্রুত সময়ে এর আগে কোনো আসামিকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।
পুলিশ কমিশনার বলেন, দুই আসামিকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসার পর অনিক হত্যাকাণ্ডের সময় যে পিস্তল থেকে ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়েছিল, সেটি উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার কলকাতা পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি তুষার ও তার সহযোগী এখলাসকে কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারপ্তৃত দুই আসামি ইমন ও শোভন প্রসঙ্গে অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, কুমিল্লার দাউদকান্দির চক্রশালা এলাকা থেকে শোভন ও ইমনকে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় সোমবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। চকবাজার থানা পুলিশের একটি দল দুই ভাইকে রাতেই নিয়ে এসেছে চট্টগ্রামে। মূলত এই ইমনের সঙ্গে অনিকের ছোট ভাই রনিকের বাকবিতণ্ডা ও মারামারির জের ধরেই গত ১৭ জুন রাতে চট্টেশ্বরী রোডের মুখে অনিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ঈদের পর দিন রনিক বাইক চালিয়ে ব্যাটারি গলিতে যাওয়ার পর ইমনের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে রাতে দুই পক্ষ চট্টেশ্বরী রোডের মোড়ে জড়ো হয় এবং সেখানে খুন হন অনিক। প্রাথমিক তদন্তে আমরা জেনেছি, সেদিন শোভন অনিকের বুকে প্রথম ছুরিকাঘাত করে। পরে মিন্টু ও ইমন আঘাত করে। আর ফাঁকা গুলি করে মহিউদ্দিন তুষার।
তুষার ও এখলাসের আগে থেকেই ভারত ও মালয়েশিয়ার ভিসা ছিল জানিয়ে এডিসি রউফ জানান, অনিক মারা যাওয়ার খবর শুনে তুষার এখলাসকে নিয়ে রাতেই ঢাকার যাত্রাবাড়ি চলে যায়। পর দিন বেনাপোলের বাস ধরে এবং ১৯ জুন তারা ভারতে প্রবেশ করে। এই ঘটনায় অনিকের বাবা মো. নাছির চকবাজার থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন মহিনউদ্দীন তুষার (৩০), মিন্টু (৩২), ইমরান শাওন (২৬), ইমন (১৬), শোভন (২৪), রকি (২২), অপরাজিত (২২), অভি (২১), বাচা(২২), এখলাস (২২), দুর্জয় (২১) ও অজয় (২১)।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান আরো বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ে হত্যা মামলার আসামিরা ছাড় পাবে না। হত্যার ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বড়ভাই–ছোটভাই কোনো বিষয় না। হত্যাকাণ্ড আমাদের মেইন কনসার্ন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কোনো বড়ভাই–ছোটভাইও ছাড় পাবে না। তিনি বলেন, সম্প্রতি সিএমপিতে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা মোটামুটি সব আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। অনিক হত্যার প্রধান চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি।
সংবাদ মম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান, উপ–পুলিশ কমিশনার (সদর) শ্যামল কুমার নাথ, উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসাইন, অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ জুন রাতে চট্টেশ্বরী পল্টন রোডে গাড়ির হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে খুন হন স্থানীয় আওয়ামী নেতা মো. নাছির উদ্দিনের ছেলে আবু জাফর অনিক (২৬)। অনিক পেশায় গাড়ি চালক। জানা যায়, রোববার বিকাল ৫টার দিকে গাড়ির হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে অনিকের ছোট ভাই আবু হেনা রনিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কিছু যুবকের। পরে রাত ৮টার দিকে সেই সমস্যা সমাধানে গিয়েছিলেন বড় ভাই ও বাবা। সেখানে বাবার সামনে অনিককে ছুরিকাঘাত করে মহিউদ্দীন তু্‌ষার ও তার সহযোগীরা।আমার বাঁশখালী ডটকম।


প্রিয় পাঠক,
প্রেস বিজ্ঞপ্তি  প্রতিনিধিরা নিউজ পাঠান
-মেইল: amarbanskhali@gmail.com
ভিজিট করুনwww.amarbanskhali.com
প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ্  প্রকাশক 
এম.ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদ
নিচে আপনার মতামত লিখুন

No comments:

Post a Comment

পোস্টের নীচে বিজ্ঞাপন