অজ্ঞান পার্টির ‘গুজব’ আতংকিত গ্রামবাসী! - আমার বাঁশখালী ডটকম AmarBanskhali.Com

ব্রেকিং নিউজ

শীর্ষ বিজ্ঞাপন

নিউজ এর উপরে বিজ্ঞাপন

Thursday, July 12, 2018

অজ্ঞান পার্টির ‘গুজব’ আতংকিত গ্রামবাসী!


লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় এক সাপ্তাহে একটি গুজবের কারণে পরিবার গুলোর মধ্যে আতংকে বিরাজ করছে। এমনকি রাতেও ঘুমাতে পারছে না শান্তিতে। রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন পরিবার গুলো। এদিকে এই গুজবের কারণে মানুষকে সচেতন করতে আইন শৃংখলা মিটিংসহ বিভিন্ন স্থানে সভা সেমিনার করছেন পুলিশ। মানুষের মাঝে লিফলেট,মাইকিংসহ লোকাল টিভির মাধ্যমে প্রচার করে জানা দিচ্ছে এটি একটি গুজব ! । বেশ কয়কটি স্থানে বিছিন্ন কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ছড়িয়ে গেছে রহিঙ্গা ও অজ্ঞান পার্টি এসেছে এলাকায়। যার ফলে এলাকার লোকজন আতংকিত।
গত ৬ দিন আগে উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের হাজরানীয়া বাজারের রাত ৮টার দিকে বাজারের পাশেই চোর সন্দহে আটক করলে স্থানীয়রা গনধোলাই দেয়। পরে মুহুর্তে অজ্ঞান পার্টির সদস্য ধরা পড়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় সহ¯্রাধিক লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।পরে আহত অবস্থায় সাইফুল ইসলাম নামে ওই ব্যাক্তিকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্যকম্পেক্সে ভর্তি করায় পুলিশ। সেদিন রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে রহিঙ্গা ও অজ্ঞান পার্টি এসব করছে।
সেদিন রাতেই ৮ জুলাই রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে হাতীবান্ধার জোসনার বাজার এলাকায় সন্দেহভাজন কয়েটি মোটরসাইকেল দেখে ধাওয়া করে স্থানীয়রা। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও দুটি মোটরসাইকেলসহ ৬ জনকে আটক করে জনতা। খবর পেয়ে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আটকৃতদের থানায় আনতে চাইলে বাঁধ সাধে স্থানীয় লোকজন। একপযার্য়ে থানা থেকে আরও অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ওই ৬ চাকরিজীবীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার পথে উত্তেজিত জনতা চড়াও হয়। এসময় বিক্ষুদ্ধ জনতার ইট-পাটকেলের ঢিলে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তার পরের দিন ১০ জুলাই কালীগঞ্জের বৈরাতি গ্রামে একজন এনজিও কর্মী মারধরের স্বীকার হন। পুলিশ ঘটনা স্থলে গেলে পুলিশ ওই এনজিও কর্মীকে তুলে দেন। উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে যায় এনজিও কর্মী নন! ওই ব্যাক্তি অজ্ঞান পার্টির লোক। পরে বিক্ষুদ্ধ জনতার ইট-পাটকেলের ঢিলে থানায়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান মাহব্বুজ্জামান আহমেদ জনতাকে সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। গত বুধবার (১১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে উপজেলার কাকিনা বাজারে রহিঙ্গা ও অজ্ঞান পার্টি মনে করে গণধোলাই দেয় এক মানসিক রোগীকে। পরে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ ধারণে বেশ কয়কটি ঘটনায় পর থেকেই কালীগঞ্জ উপজেলাসহ আশ-পাশের গ্রাম গুলোতে আতংকে বিরাজ করছে। এর ফলে অজ্ঞানপার্টি,রহিঙ্গা, ছেলে ধরাদের ভয়ে অভিভাবকদের গ্রাম বাসীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অনেকে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন । গত ৬/৭ দিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মানসিক রোগীসহ এনজিওকর্মী মারধরের শিকার হয়েছেন। অপরিচিত লোকজন দেখলেই অনেকেই ভয়ে চলে যাচ্ছেন । পুলিশ বলছে, কোথাও চুরি ও ডাকাতির এবং অজ্ঞান করে ¯øাতাহানি কোনো ঘটনাই ঘটেনি, পুরোটাই গুজব !।
এইসব গুজবের কারণে বুধবার(১২ জুলাই) রার ৯টার দিকে উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের মিলনায়তনে আইন শৃংখলার মিটিং করেন উপজেলা পুলিশিং কমিটি । সেই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রসাশক শফিউল আরিফ ও লালমনিরহাট পুলিশ সুপার রশিদুল হক। মিটিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন,যারা গুজব ছাড়াচ্ছেন তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা চিহ্নিত করেছি। এর পরেই যদি কেউ গুজব ছাড়াবেন তাদের মাদক ব্যবসায়ীদের মত হবে। সাবধান করে দিতেই আজ এই আয়োজন করেছি। তবে ভয়ের কিছ‚ নেই ২৪ ঘন্টা আমাদের পুলিশ আপনাদের পাহারা দিবে। নিশ্চিত ভাবে ঘুমাবেন। যদি কাউকে সন্দেহ হয় তবে পুলিকে খবর দিন অথবা আমার ফোনে কল করুন।
কয়েকজন অভিভাবক জানান, ছদ্দবেশে কয়েকজন ব্যক্তি এলাকায় চলাচল করছে এমন গুঞ্জন লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে। ছদ্দবেশে ব্যক্তিরা রহিঙ্গা ছেলে ধরা হতে পারে এ কারণে সন্তানদের একা একা বাইরে যেতে দিচ্ছে না। রাতে ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। কালীগঞ্জ এলাকার রাজু জানান,ভিন্ন জায়গায় মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি করা হচ্ছে। মিথ্যা গুজবে কেউ কান না দিয়ে মিথ্যাচারকে প্রতিহত করুন। বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মাঝে গত কয়েক দিন ধরে অজ্ঞানপার্টির আতংক বিরাজ করছিল।
‘গুজব’ বলছেন পুলিশ কর্মকর্তারাও: জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুকবুল হোসেন বলেন, রহিঙ্গা, আজ্ঞান পাির্ট আতঙ্কের পুরোটাই গুজবের ওপর ভিত্তি করে। কারও বাড়িতে অজ্ঞান করে সব লুট হয়েছে, এখন পর্যন্ত এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। থানায় কোনো মামলাও হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে থানা-পুলিশ এলাকায় এলাকায় গিয়ে সভা করে তাঁদের নিজ নিজ এলাকা পাহারা দেওয়ার কথা বলেছেন। তাঁদের এটাও বলে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন বেআইনি কোনো কিছু না করেন। তিনি আরো বলেন,মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক ছিল, সেটাও এখন কেটে গেছে। বিষয়টা পুরোটাই গুজব।
বুধবারের রাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার পর মুঠোফোনে পুলিশ সুপার রশিদুল হক বলেন, আস্তে আস্তে আতঙ্ক কেটে যাচ্ছে। এখন সবাই বুঝতে পারছে যে এটা পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার একটা চক্রান্ত। আমার বাঁশখালী.কম। সূত্র: কারেন্টনিউজ ডটকমডটবিডি। 

No comments:

Post a Comment

পোস্টের নীচে বিজ্ঞাপন