আমার বাঁশখালী ডেস্ক:
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র দু’টির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর গাজীপুরের তেলীপাড়ার ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রাইমারি গ্রাউন্ড স্টেশন এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র ব্যাকআপ গ্রাউন্ড স্টেশন। অনুষ্ঠানে স্যাটেলাইট ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র দু’টির নাম সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে নামকরণ করার প্রস্তাব করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রীর প্রস্তাবকে গ্রহণ করে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র দু’টির নাম সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে নামকরণ করা হয়।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করে গেছেন। আর সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে আমরা মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি। মুজিব থেকে যাত্রা শুরু করে আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছে পৌঁছে গেছি।
মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীবওয়াজেদ জয় বলেছেন, এখন বঙ্গবন্ধু নাম মহাকাশে পাঠিয়েছি, কোনো সরকারই এই নাম মুছে ফেলতে পারবে না।
মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ উদযাপন এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গাজীপুর ও বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন জয়।
১৫ আগস্ট হত্যা এবং পরবর্তীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টার কথা উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই না আওয়ামী লীগের সব নেতাদের শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারীদের পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিলো।
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারাদেশে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া হবে জানিয়ে জয় বলেন, বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ফাইবার অপটিক দিয়ে ইন্টারনেট দেওয়া সম্ভব নয়। সেখানে আমরা স্যাটেলাইট দিয়ে ইন্টারনেট পৌঁছে দেব। দ্বীপাঞ্চলগুলোতেই আমরা ইন্টারনেট দেব।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমরা আধুনিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠছি। আমরা এখন আর দরিদ্র দেশ নয়। স্যাটেলাইটের সুবিধা টেলিভিশনগুলো পাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ার জন্য প্রত্যেক বছর কোটি কোটি টাকা দিতে হয়। এখন সব সার্ভিস আমরা আমাদের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দিতে পারব। স্যাটেলাইটের খরচ এই ভাড়া থেকেই উঠে আসবে। এই স্যাটেলাইট লাভজনক হবে।
জয় বলেন, আমরা গর্ব করতে পারছি। সারাবিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি। গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় ভোর ২টা ১৪ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে সফলভাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণের মধ্যে দিয়ে বিশ্বের ৫৭ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করে। ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ তার কার্যক্রম শুরু করেছে। এই দু’টি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে স্যাটেলাইট সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহীতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হলো। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ উদযাপন এবং গাজীপুর ও বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
No comments:
Post a Comment