এই ১৫ বছরে তাঁর জীবনে অনেক কিছু ঘটে গেছে। স্বামীর শোকে শয্যাশায়ী হয়ে মারা গেছেন স্ত্রী আয়তুননেসা। বাবাকে কাছে না পাওয়ার কষ্ট নিয়ে বড় হয়ে উঠেছেন ছেলে মেয়েরাও।
কিন্তু, এতগুলো দিন কোথায় ছিলেন লনু মিয়া? কী করেছেন এতদিন? কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি। যেন জীবন থেকে এতগুলো বছর হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
জানা যায়, দুই ছেলে পাঁচ মেয়ের বাবা লনু মিয়া চা খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। ভুলে যাওয়ার রোগ ছিল তাঁর। হয়তো ভুলে গেলেন বাড়ির ঠিকানাই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি তাঁর পরিবার।
অবশেষে চার পাঁচ মাস আগে লনু মিয়া সাতক্ষীরা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ত্রিশ মাইল মোড়ে একটি মসজিদে আশ্রয় নেন ।
চা দোকানি নূর ইসলামের তত্ত্বাবধানে সেখানে লনু মিয়ার থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। অসুস্থ লনু মিয়ার চিকিৎসার জন্য ওষুধপত্রও কিনে দেন নূর ইসলাম ও অন্যরা।
লনু মিয়া কথা বলতে পারেন না। মাঝে মাঝে মতলব কথাটি বলতেন।
আর এই কথার সূত্র ধরেই চাঁদপুরের মতলব গ্রামে খোঁজ নেওয়া হয়। ফোন পেয়েই তাঁর কাছে আজ ছুটে যান লনু মিয়ার ছেলে শাহজাহান সরদার, ছোট ভাই শাহ আলম ও নাতি ফারুক হোসেন।
এ সময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। লনু মিয়াকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তাঁর পরিবার।
বাবাকে পেয়ে চা দোকানি নূর ইসলাম ও অন্যদের ধন্যবাদ জানান শাহজাহান সরদার। আর গাড়িতে ওঠার সময় তাঁদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন লনু মিয়া।
No comments:
Post a Comment