আমার বাঁশখালী.কম.ডেক্স রিপোর্টার মোঃ রোবেল.
রবিবার রাতে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের আমদুয়ার পূর্বপাড়া গ্রামে জাকির হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই বাড়িতে ভিড় জমান প্রতিবেশীরা।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার একই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের তরুণীর (১৮) সঙ্গে আড়াই লাখ টাকা দেনমোহরে আমদুয়ার গ্রামের এক তরুণের (২০) বিয়ে হয়। বিয়ের পরদিন ছেলের বাড়িতে বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে কনে পক্ষের শতাধিক অতিথি অংশ নেন। একদিন পর রোববার রাতে ফুলশয্যার আয়োজন করে বরের বন্ধুরা।
গভীর রাতে বাসরঘরে নববধূর পেট ব্যথা শুরু হয়। পরে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়ার জন্য স্বামীকে চাপ সৃষ্টি করেন নববধূ। কিন্তু স্বামী তাকে সকালে বাড়ি পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
ভোর রাতে ঘরের পাশে টয়লেটে গিয়ে নববধূ হঠাৎ চিৎকার দেন। এ সময় বাড়ির লোকজন ছুটে এসে নবজাতকের কান্নার শব্দ পান। পরে পরিবারের লোকজন টয়লেট থেকে নববধূ ও নবজাতককে উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার নববধূর শাশুড়ি জাহারা খাতুন বলেন, প্রসবের পর নবজাতককে হত্যার চেষ্টা করেছিল নববধূ। প্রসবের পর টয়লেটের কমোডে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করায় নবজাতকের মাথায় আঘাত ও শরীরে ময়লা লেগে যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে নববধূর বাবার বাড়ির লোকজনকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে কৃষ্ণপুর গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন এসে নবজাতক ও নববধূকে বাবার বাড়ি নিয়ে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কনে পক্ষের লোকজন নববধূ ও নবজাতককে নিয়ে যাওয়ার সময় বিয়ের সময় বর পক্ষের দেয়া গয়নাগুলো ফেরত দিয়ে বিয়ের খরচ বাবদ ৫৫ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নববধূ বলেন, আমি লেখাপড়া করছিলাম। একে-অপরকে ভালো লাগার সূত্র ধরে প্রতিবেশী সৌদি প্রবাসী মাহবুবুল আলম দুলালের ছেলে মেহেদী হাসান পারভেজের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে দৈহিক সম্পর্ক করে পারভেজ। এতে গর্ভবতী হয়ে পড়লে কাউকে না জানিয়ে পারভেজকে বিয়ের জন্য চাপ দেই। বিয়ের কথা বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে সে। আমার পেটে তার সন্তান জেনে পারভেজ আমার অজান্তে বিদেশে পাড়ি দেয়ার আয়োজন করে। পরে জানতে পারি প্রথম দফায় ফ্লাইট মিস হলেও গত বৃহস্পতিবার বিয়ের দিন সৌদিআরবের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় পারভেজ। আমি এখন নবজাতক এই কন্যা সন্তান নিয়ে কোথায় যাব? আমি না পেলাম স্ত্রীর মর্যাদা, না পেল আমার সন্তান বাবার স্বীকৃতি।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা রিকশা চালিয়ে কোনো রকমে সংসার চালান। অভাবের সংসার আমাদের। আমরা অসহায়। লোকজন আমাদের নিয়ে এখন টিটকারি করে। আমি সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে এই প্রতারণার বিচার চাই।
এলাকাবাসী জানান, এই মেয়েকে বিয়ে না করে গা ঢাকা দেয় পারভেজ। ছেলের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় চাপে পড়ে মেয়েটির বাবা অন্যত্র বিয়ে দেন। ওদের চাপে মেয়ের সম্মতি না নিয়ে বৃহস্পতিবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হয়।
স্থানীয় মেম্বার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, খবর শুনে নববধূ ও কন্যা সন্তানকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসি। অভিযুক্ত ছেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় দেখছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজগরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। মেয়ের পরিবার আইনি সহায়তা চাইলে সব রকম সহায়তা দেয়া হবে।
নেট সূত্র...... অনলাইন।
No comments:
Post a Comment