আমার বাঁশখালী.কম ডেক্স: সহনীয়
মাত্রায় ঘুষ নেয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বক্তব্যের
প্রেক্ষিতে তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক
সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ শাখা টিআইবি।
নাহিদের বক্তব্যে সরকারের প্রতি মানুষের ধারণা খাবার হবে বলেও মনে করে সংস্থাটি।
শিক্ষামন্ত্রী এমন বক্তব্য দেয়ার দুই দিন
পর মঙ্গলবার টিআইবির এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান হয়। এতে বলা হয়, ‘মন্ত্রী
নিজেকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তার এই
সৎসাহসের যথার্থতার স্বার্থেই নৈতিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে পদত্যাগ করে
অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত।’
গত রবিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকারী
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী সহনীয় মাত্রায় ঘুষ
খাওয়ার আহ্বান জানান। তার এই বক্তব্যে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে দেশ জুড়ে।
মন্ত্রী সেদিন বলেন, ‘স্কুলে খাম তৈরি করা
থাকে, আপনার কাজ হল আপনি গেলেন, গেলে আপনার খামটা আপনার হাতে ধরাই দিলে
আপনি খাইয়্যা-দাইয়্যা তারপরে আসার সময় চলে আসবেন। আইস্যা রিপোর্ট দেবেন ঠিক
আছে।’
‘আপনারা দয়া করে ভালো কাজ করবেন। আপনাদের
প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়্যা খাবেন। অসহনীয় হয়ে
বলা যায় আপনারা ঘুষ খাইয়েন না, এটা অবাস্তবিক কথা হবে।’
নাহিদ সেদিন বলেন, ‘খালি যে অফিসার চোর,
তা না, মন্ত্রীরাও চোর, আমিও চোর। এই জগতে এ রকমই চলে আসতেছে। সবাইকে
আমাদের পরিবর্তন করতে হবে।’
শিক্ষার প্রতিটি ধাপেই ঘুষ, দুর্নীতির
প্রভাব রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এই
দুর্নীতির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অব্যবস্থাপনা দূর করতে শিক্ষামন্ত্রী গত আট
বছরেও তেমন কিছু করতে পারেননি।
টিআইবির বিবৃতিতে নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, তিনি মনে করেন মন্ত্রীর এই বক্তব্যে তার হতাশার প্রকাশ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রীর উচিত ছিল
দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনসীলতার নীতির প্রয়োগ। ইফতেখার বলেন, ‘তার যদি
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সৎসাহস ও দৃঢ়তা থাকত তাহলে এরূপ অসহায়ত্বের মাধ্যমে
দুর্নীতির আরো বিস্তার ঘটানোর প্রেসক্রিপশন দেয়ার প্রয়োজন ছিল না।
সেক্ষেত্রে তিনি তার দাবি অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য-সহনশীলতার
কার্যকর প্রয়োগ করতে পারতেন।’
টিআইবির গবেষণায় শিক্ষাখাতে দুর্নীতির যে
চিত্র উঠে এসেছে, শিক্ষামন্ত্রী তাকে অস্বীকার ও উপেক্ষা করেছেন বলেও
অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে। আর এর ফলেই তিনি নিজেকে দুর্নীতিবাজদের হাতে
জিম্মি ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও মন্তব্য করা হয় বিবৃতিতে।
তবে বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন,
শিক্ষামন্ত্রীর ঢালাওভাবে সবাইকে দুর্নীতিবাজ বলা উচিত হয়নি। তিনি বলেন,
‘প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক মন্ত্রিপরিষদের সকল সহকর্মীসহ
নিজেকে চোর সম্বোধন জনমনে সরকার সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণার অবতারণা
করেছে।’
সূত্র: কারেন্টনিউজ ডটকমডটবিডি
No comments:
Post a Comment