২০১৭ সালে মারা গেছেন যে সকল সংসদ সদস্যেরা |
আমার বাঁশখালী ডেক্স:
লতি
বছরে তিনজন ও সাবেক ২৬ জনসহ মোট ২৯ এমপি জাতীয় সংসদ থেকে চিরবিদায়
নিয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এমপি মারা গেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।
তাদের সাবেক, বর্তমান মিলে মোট ১৩ সংসদ সদস্য মারা গেছেন। আর দেশের অন্যতম
বৃহৎ দল বিএনপির ১১ এমপি মারা গেছেন। এদের মধ্যে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিও
রয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির চারজন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের একজন
সাবেক সংসদ সদস্য মারা যান। অন্যদিকে সংসদ সচিবালয় হারান এক কর্মচারী।
ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মন্ত্রী ছায়েদুল হক ও গোলাম মোস্তফা আহমেদ মারা যান। এ তিন জনের মধ্যে দু’জনই মারা যান বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে।
একাধিকবার এমপি হিসেবে সংসদে সুনামগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা যান চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি। সাবেক রেলমন্ত্রী এবং আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ৫ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি ক্যান্সারে ভুগলেও তা অনেকেরই অজানা ছিল। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। সংসদে বক্তব্য দেয়ার সময় যুক্তি, তর্ক, ইতিহাস ও হাস্যরসের কারণে সবার কাছে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক ১৬ ডিসেম্বর ৭৫ বছর বয়সে মারা যান। তিনি ছাত্রলীগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন। ১৯৬৫-৬৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজছাত্র সংসদে ছাত্রলীগের ভিপি নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন এবং ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের এমপি গোলাম মোস্তফা আহমেদ টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনা আহত হওয়ার পর প্রায় একমাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ ডিসেম্বর মারা যান। অথচ চলতি বছরের ২২ মার্চ উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে হারিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। নিজের নির্বাচনী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসার পথে ১৮ নভেম্বর দুর্ঘটনায় শিকার হন তিনি। টাঙ্গাইলের নাটিয়া পাড়ায় রংপুরগামী একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে এমপি ও তার গাড়ির চালকসহ চারজন আহত হন।
আওয়ামী লীগের যারা মারা গেছেন
চলতি বছরে সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় এ তিনজন ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ (যশোর-২), সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলান (নীলফামারী-৪), মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ (ময়মনসিংহ-৭), তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদ এবং সাবেক এমপি ইসহাক মিঞা (চট্টগ্রাম-১০), খান টিপু সুলতান (যশোর-৫), সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ এবং সাবেক এমপি নারারণগঞ্জ জেলার ডা. মো. সাদত আলী সিকদার, অধ্যক্ষ এস এম আবু সাঈদ (নড়াইল-১), তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও সাবেক এমপি সরদার মোশারফ হোসেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার শফিকুল ইসলাম খোকা (জামালপুর-৩) ও মো. মর্তুজা হোসেন মোল্লা (কুমিল্লা-২) মারা যান।
বিএনপির যারা মার গেছেন
বিদায়ী বছরে বিএনপির সাবেক সংস্থাপন ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী নূরুল হুদা (চাঁদপুর-২), কাজী মো. আনোয়ার হোসেন (ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-১), ধীরেন্দ্র নাথ সাহা (নড়াইল-১), কে এম আবদুল খালেক চন্টু (কুষ্টিয়া-৩), এহসান আলী খান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নু (মানিকগঞ্জ-২ ও ৩), হাজী মো. মোজাম্মেল হক (চুয়াডাঙ্গা-২), ডা. মো. ছানাউল্লা (ঢাকা-২২), সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় সংদের স্পিকার আবদুর রহমান বিশ্বাস (বরিশাল-৫), প্রাদেশিক পরিষদ এবং সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার (হোমনা, কুমিল্লা) ও জয়নুল আবেদীন সরকার (লালমনিরহাট-১) মারা যান।
জাতীয় পার্টি
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি জাফরুল হাসান ফরহাদ (বরগুনা সদর বেতাগী), আহসান আহমদ (নীলফামারী-২), মো বদরুজ্জামান (কুষ্টিয়া-৩) ও মোফাজ্জল হোসেন (রংপুর-৩) মারা যান।
আর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের টাঙ্গাইলের (গোপালপুর-ভূঁয়াপুর) সাবেক আবদুল মতিন মিয়াকেও এ বছর হারায় জাতীয় সংসদ। এ ছাড়া সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারী মনিরুজ্জামান সরদার।
No comments:
Post a Comment