আমার বাঁশখালী ডেক্স:
দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর এল
দুঃসংবাদটি। ইরাকে অপহৃত ৩৯ জন ভারতীয়ের মধ্যে ৩৮ জন যে আইএসের হাতে খুন
হয়েছেন। আর তাদের গলিত দেহ শিগগিরই দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সরকার জানিয়েছে, বাকি এক জনের মৃত্যু নিয়ে
নিশ্চিত হওয়া কিছু সময়ের অপেক্ষামাত্র।
প্রথমে রাজ্যসভায় এবং পরে সাংবাদিক বৈঠকে
সুষমা জানিয়েছেন, উত্তর পশ্চিম মসুলের বাদুস গ্রামের একটি টিলা থেকে উদ্ধার
হয়েছে ওই ভারতীয় শ্রমিকদের দেহাবশেষ। বিশেষ ধরনের উপগ্রহের সাহায্যে তোলা
ছবি থেকেই ওই দেহাবশেষের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পরে নিহতদের
পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
২০১৪ সালে মসুলে হাসপাতাল তৈরির কাজে
নিযুক্ত হন এই ভারতীয় শ্রমিকেরা। পরে তাঁদের পাঠানো হয় পশ্চিম মসুলের বাদুস
এলাকায়। তাঁদের অপহরণ করে আইএস। গত সাড়ে তিন বছর ধরে চলেছে তাঁদের সন্ধান
ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে দৌত্য। আইএসের হাতে বন্দি ৪৬ জন ভারতীয়
নার্সকে দেশে ফেরাতে পেরেছিল দিল্লি। কিন্তু নিখোঁজ ৩৯ শ্রমিকের ক্ষেত্রে
ব্যর্থ হয়েছে দৌত্য।
অবশেষে আজ সুষমা স্বরাজ রাজ্যসভায় বলেছেন,
“মৃতদেহের স্তূপের মধ্যে থেকে দেহাবশেষ চিহ্নিত করে বাগদাদে ডিএনএ
পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসাটাই চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল।” ওই স্তূপের মধ্যে ৩৯টি
দেহাবশেষের লম্বা চুল ও ইরাকিদের মতো জুতো ছিল না। তা দেখেই সেগুলির ডিএনএ
পরীক্ষা করানো হয়। জানা যায়, সেগুলিই নিহত ভারতীয়দের দেহাবশেষ। সুষমা
জানিয়েছেন, গত কালই ওই পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। এ দিন
তিনি বলেন, “নিশ্চিত প্রমাণ হাতে পাওয়ার পরেই মৃতদের পরিবারকে এ কথা জানাতে
চেয়েছিলাম আমরা।”
ওই ৩৯ জনের বেশির ভাগই (২৭) পঞ্জাবের
বাসিন্দা। এ ছাড়া রয়েছেন বিহার (৬), হিমাচলপ্রদেশ (৪), পশ্চিমবঙ্গের (২)
মানুষ। সুষমা জানাচ্ছেন, শীঘ্রই বিশেষ বিমানে ইরাক রওনা হবেন বিদেশ
প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ। মৃতদেহ নিয়ে বিমানটি প্রথমে অমৃতসর, তার পর পটনা
হয়ে কলকাতায় যাবে।
গত বছর জুলাই মাসে আইএস জঙ্গিদের হটিয়ে
ইরাকি সেনা মসুলের দখল নেওয়ার পরই ভি কে সিংহ সে দেশে যান। নিখোঁজ
ভারতীয়দের বাবা-মা বা নিকটাত্মীয়ের ডিএনএ-র নমুনা দেওয়া হয় ইরাকি
কর্তৃপক্ষকে। সুষমার কথায়, ‘‘বাদুস এলাকার একটি টিলায় রেডারের মাধ্যমে
দেখতে পাওয়া যায় অনেকগুলি দেহ। ৩৯ জনের দেহ ছিল সেখানে।’’ ৩৮ জনের ডিএনএ
নমুনা ৯৮ শতাংশ মিলেছে। কিন্তু বিহারের রাজু যাদবের ক্ষেত্রে এই মিল ৭০
শতাংশ। ইরাকের নিয়ম অনুযায়ী ৯৮ শতাংশের কম মিললে নিশ্চিত ভাবে শনাক্তকরণ
করা হয় না। রাজুর আরও কাছের আত্মীয়দের ডিএনএ নমুনা ফের চেয়ে পাঠিয়েছেন
ইরাকি কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: আনন্দবাজার
No comments:
Post a Comment