সবুজ চাদরে মোড়ানো বাঁশখালীর পুকুরিয়া চা বাগান - আমার বাঁশখালী ডটকম AmarBanskhali.Com

ব্রেকিং নিউজ

শীর্ষ বিজ্ঞাপন

321

নিউজ এর উপরে বিজ্ঞাপন

Tuesday, May 29, 2018

demo-image

সবুজ চাদরে মোড়ানো বাঁশখালীর পুকুরিয়া চা বাগান

18449634_1894904470774260_6814886872257293942_o


আমার বাঁশখালী.কম, প্রতিবেদক-রোমান চৌধুরী: 
দু-চোখ যেদিকে যায় চারদিকে শুধুই সবুজের সমারোহ। নীল আকাশের নিচে যেন সবুজ গালিচা। উঁচু-নিচু টিলা এবং পাহাড়ঘেরা সমতলে সবুজের চাষাবাদ। শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঝে মাঝে টিলা বেষ্টিত ছোট ছোট জনপদ। পাহাড়ের কূল বেয়ে আকাবাঁকা মেঠোপথ। নেই কোন যান্ত্রিক দূষণ, উত্তরে আঁকাবাঁকা পথে কল কল রবে বয়ে গেছে সাঙ্গু নদী বঙ্গোপসাগর গর্ভে, পশ্চিমে বিস্তীর্ন জলরাশি, ঝাউগাছ বেষ্টিত বাঁশখালী ও পারকি নামের অপুর্ব সুন্দর দুটি সমুদ্রসৈ্কত, দক্ষিন-পশ্চিমে বিশাল অঞ্চলজুড়ে রয়েছে লবণ মাঠ, যেখানে শ্রমিকরা বছরের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লবণ উৎপাদন করে থাকে, এ যেনো এক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের লীলাভুমি। এমন অতুলনীয় অন্তহীন সৌন্দর্যে একাকার হয়ে আছে বাঁশখালী-পুকুরিয়া চা বাগান। চা বাগানের কথা উঠলেই আমাদের প্রায় সকলের চোখের সামনে ভেসে উঠে সিলেট কিংবা শ্রীমঙ্গলের দূশ্যপট। ব্যাপারটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ, বাংলাদেশের বৃহত্তম ও অধিকাংশ চা বাগানগুলোও যে রয়েছে এই সিলেট ও শ্রীমঙ্গলেই। আমাদের অতিপরিচিত এই পরিমন্ডলের বাইরেও যে সবুজ চা গাছের সজীব প্রকৃতি রয়েছে তা অনেকের অজানা। দেশের হাতে গোনা কয়েকটি ক্লোন চা বাগানের মধ্যে এই বাগানটি অন্যতম, স্বাদ ও গুনগত মানের জন্য এই বাগানের চা পাতা দেশ-বিদেশে বেশ প্রশংসিত হয়েছে, বহির্বিশ্বে বিপুল চাহিদার কারনে এই বাগানের প্রায় সব চা পাতা বিদেশে রপ্তানির হয়ে থাকে এবং এই চা পাতা রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বেশ অবদান রাখছে অত্র চা বাগানটি। সাম্প্রতিক সময়ে অসাধারন সুন্দর এই ক্লোন চা বাগানটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে , পুকুরিয়া চা বাগান,বাঁশখালীর ইকোপার্ক ও বাঁশখালী সি বিচ কে কেন্দ্র করে বর্তমানে বাঁশখালীর উপজেলার পর্যটন খাত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

অত্র চা বাগানটি প্রতিষ্টার ইতিবৃক্ত...
ইংরেজ শাসন আমলে ১৯১২ইং তে তৎকালীন অত্র অঞ্চলের জমিদার রায় বাহাদুর এই চা বাগানটি গোড়াপত্তন করেন, কুন্ডু সম্প্রদায়ের রায় বাহাদুর এই বাগানের প্রতিষ্ঠাতা হওয়ায় পরবর্তীতে এটি কুন্ডু চা বাগান নামে পরিচিতি লাভ করে, ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময়কাল পর্যন্ত এ চা বাগান রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব ছিল কুন্ডু পরিবারের উপর। পাক-ভারত যুদ্ধের পর কুন্ডু রায় বাহাদুর পরিবার পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারত চলে গেলে এই বাগানের তদারকির দায়িত্ব নেন পুকুরিয়া ইউনিয়নের মুন্সি পাড়ার আব্দুস ছালাম মুন্সি। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধের সময় এ চা বাগান ধবংসস্তপে পরিনত হয়। পরে এই চা বাগানকে রাষ্টপতি ৯৮/৭২নং ধারা মোতাবেক খাসভুক্ত করে আবার উজ্জীবিত করার জন্য জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম চা বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া দেয়, সে অনুসারে ১৯৮৫ সালে চট্টগ্রাম চা বোর্ড প্রথম আবাদ শুরু করে। তারা তাদের অভীষ্ট লক্ষ্য পৌঁছাতে না পারাতে দায়িত্ব অর্পণ করা হয় বাঁশখালী টি কোম্পানির ওপর। বাঁশখালী টি কোম্পানি বাগান সম্প্রাসারন করে বিশাল এলাকা চা চাষের আওতায় নিয়ে আসে। ২০০৩ সাল পর্যন্ত চা বাগানের কার্যক্রম চালায় বাঁশখালী টি কোম্পানি। ২০০৩ সালে বাঁশখালী টি কোম্পানি এর মালিকানা বহুমুখী বাংলাদেশী এনজিও সংস্থা ব্রাকের কাছে হস্থান্তর করা হয়। ব্রাকের কাছে চা বাগানের দায়িত্ব ভার প্রদানের পর ব্রাক প্রায় দেড় হাজার একর জায়গাকে চা চাষের আওতায় নিয়ে আসে। ২০০৪ সালের আগ পর্যন্ত এই বাগানের কাঁচা পাতা সংগ্রহ করে সুদুর ফটিকছড়ির কৈয়াছড়া চা বাগানে নিয়ে গিয়ে পক্রিয়াজাত করা হতো, ২০০৪ সালে এ বাগানে চা প্রক্রিয়াজাত করন যন্ত্র স্থাপন করা হয়। ব্রাকের পরিচালনায় উক্ত বাগানটি ব্যাপক সম্প্রসারণ ও অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের পর ডিসেম্বর ২০১৫ইং তে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপকে এই বাগানের মালিকানা হস্থান্তর করা হয় , বর্তমানে সিটি গ্রুপের নিবিড় তক্তাবধানে এই চা বাগানটি পরিচালিত হচ্ছে । 
অবস্থানঃ 
চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে বাঁশখালী থানার পুকুরিয়া ইউনিয়নে এই চা বাগানটি অবস্থিত, ভিন্ন দুইটি পথ অনুসরণ করে এই চা বাগানে যাওয়া যায়।

রোড প্লান ০১...
চট্টগ্রাম শহর থেকে বাঁশখালীগামী যেকোনো গাড়িতে করে এই বাগানে যেতে পারবেন, শহরের বহদ্দারহাট অথবা নতুনব্রীজ থেকে বাঁশখালীগামী স্পেশাল সার্ভিস বাসে ৫৫টাকা ভাড়ায় টিকেট সংগ্রহ করে বাসে উঠে পড়ুন, বাঁশখালীর প্রবেশপথ চাঁদপুর বাজারে নেমে ১৫০টাকায় ভাড়ায় যাওয়ার সিএনজি গাড়ি রিজার্ভ ভাড়া করে চা বাগান চলে যান, অথবা চাঁদপুর বাজার থেকে জনপ্রতি ১৫টাকা ভাড়ায় পুকুরিয়া চৌমুহনী বাজার চলে যান, এই বাজারের চৌ্রাস্তার মোড় থেকে একটু দক্ষিণ দিকে ২০ কদম হেটে গেলে দেখবেন সারিবদ্ধভাবে সিএনজি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে এই গাড়ি গুলোতে করে ১৫টাকা ভাড়ায় সরাসরি চলে যেতে পারবেন চা বাগানে,
রোদ প্লান ০২...
প্রতিবছর সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ পর্যটক ভ্রমণ করতে যায় কক্সবাজারে, এই কক্সবাজারে যাওয়া-আসার পথে আগ্রহী পর্যটকরা চাইলে চমৎকার এই চা বাগান থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। যারা প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছেন তারা সহজেই এই বাগানে যেতে পারবেন, চট্টগ্রাম শহরের নতুন ব্রীজ পার হয়ে ভেল্লাপাড়া ক্রসিং নামক স্থানে এসে দেখবেন দুইটি রোড দুইদিকে চলে গেছে, বামপাশের রোড সরাসরি চলে গেছে কক্সবাজারে, আর অপর রোডটি পিএবি সড়ক নামে চলে গেছে আনোয়ারা হয়ে বাঁশখালীর দিকে, এই রোড ধরে সামনে এগিয়ে গিয়ে বাঁশখালীর প্রবেশমুখ খ্যাত চাঁদপুর বাজার থেকে পূর্ব –দক্ষিণে ৫ কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই বাঁশখালী- পুকুরিয়া চা বাগান। ফেরার পথে পুকুরিয়া চৌমুহনী বাজার থেকে আপনি দুটি পথ অনুসরণ করে সহজে এবং কম দুরত্বে কক্সবাজার যেতে পারবেন, পুকুরিয়া চৌমুহনী বাজার থেকে পূর্ব দিকে পিছঢালা মসৃণ সড়ক ধরে ৩০ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েই মৌলভীর দোকান নামক স্থানে পৌছেই পেয়ে যাবেন মূল কক্সবাজার রোড, আর এখান থেকে সহজে চলে যেতে পারবেন কক্সবাজার, অন্য আরেকটি সহজ ও কম দুরুত্বের পথ হলো পুকুরিয়া চৌমুহনী বাজার থেকে –চাঁদপুর বাজার বাঁশখালী-পেকুয়া-চকরিয়া হয়ে কক্সবাজার, এই রোড ধরে কক্সবাজার গেলে সবছেয়ে বড় সুবিধা হলো ৪৫ কিলোমিটার দূরত্ব সাশ্রয় হবে।


আমার বাঁশখালী ডটকম
প্রেস বিজ্ঞপ্তি  প্রতিনিধিরা নিউজ পাঠান
-মেইল: amarbanskhali@gmail.com
ভিজিট করুন: www.amarbanskhali.com
প্রধান সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ শফিউল্লাহ্  প্রকাশক 
এম.ছৈয়দুল আলম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদ
নিচে আপনার মতামত লিখুন

1 comment:

  1. blogger_logo_round_35

    লেখাটি সম্পুর্ন আমার নিজের লেখা, এখানে অন্যের নামে প্রকাশ করা হয়েছে, এহেন চরম ঘৃনিত অপকর্মের জন্য আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি , লেখাটি এর আগে আমি বাঁশখালী টাইমস ২৪ কমে আমার নিজের নামে ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছে।

    ReplyDelete

পোস্টের নীচে বিজ্ঞাপন

Pages

Contact Form

Name

Email *

Message *