সম্পাদক, আমার বাঁশখালী.কম:
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আবার এল খুশির উৎসব: পবিত্র ঈদুল ফিতর। ‘আমার
বাঁশখালী.কম’ প্রিয় পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ীসহ সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ঈদ মোবারক!
মুসলমানদের জীবনে পবিত্র রমজান মাস আসে আত্মিক পরিশুদ্ধির সুযোগ নিয়ে।
দীর্ঘ এক মাস ধরে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকার মধ্য দিয়ে যে সংযমের অনুশীলন চলে, তা শুধু ইন্দ্রিয়ের কৃচ্ছ্রসাধনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
মানসিক ও আত্মিক সংযমও এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একদিকে খাদ্য-পানীয় থেকে দূরে থাকা, অন্যদিকে হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, মোহ-মাৎসর্য ইত্যাদি যাবতীয় রিপুর তাড়না থেকে অন্তরকে মুক্ত করা—এই হলো পবিত্র রমজানে সিয়াম সাধনার মর্মকথা। যা কিছু মন্দ ও অশুভ, তা বর্জন করা এবং যা কিছু শুভ ও কল্যাণকর, তা অর্জন করাই রমজানের সিয়াম সাধনার লক্ষ্য। এর মাধ্যমেই মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও অনুগ্রহ লাভ করা যায়; এভাবেই অন্যায়, অবিচার, প্রতারণা, হিংসা, ঘৃণা, বিদ্বেষ দূর করে ভালোবাসা, মায়া-মমতা, পরার্থপরতায় সুখী ও শান্তিময় জীবন ও সমাজ গড়ার প্রয়াস নেওয়া যায়।
রমজান মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংযম সাধনা ও পরিশুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যায় না। এই এক মাসের অনুশীলন বছরের অবশিষ্ট সময়ও আমাদের পরিশুদ্ধির প্রয়াসে সহায়ক হতে পারে, যদি আমরা সিয়ামের মর্মবাণীর কথা ভুলে না যাই। প্রত্যেক ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাপনে সংযম ও মিতাচারের অনুশীলন প্রয়োজন—প্রতিবছর পবিত্র রমজান এসে আমাদের এ কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায়। আমাদের সবারই আন্তরিক চেষ্টা হওয়া উচিত, পবিত্র রমজানের সংযম সাধনার প্রতিফলন যেন আমাদের সার্বিক জীবনযাপনে সারা বছর ধরে প্রতিফলিত হয়। পবিত্র রমজানের প্রকৃত উদ্দেশ্য শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। রমজানের শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসব যে আনন্দের বার্তা বয়ে আনে, তা যেন সারা বছর সবার জীবনে অটুট থাকে।
ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন বড় শহর থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ সপরিবার গ্রামের বাড়িতে যান।
সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কের দুরবস্থার কারণে ঈদে বাড়ি যাওয়ার অভিজ্ঞতা স্বাভাবিকভাবেই সুখকর হচ্ছে না।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব নষ্ট রাস্তাঘাট পুরোপুরি ঠিক করা যায়নি। ঈদের অনেক আগে থেকেই দুর্ভোগের আশঙ্কা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ হয়নি। নানা উদ্যোগ ও তৎপরতা সত্ত্বেও রাজধানী ঢাকা থেকে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল অভিমুখী সব মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
ঈদের শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময়ও একই রকমের ভোগান্তির আশঙ্কা আছে। ভোগান্তি লাঘবের জন্য মহাসড়কের যানজট এড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত
এ জন্য হাইওয়ে পুলিশের বাড়তি মনোযোগ ও দায়িত্বশীলতা প্রয়োজন। সড়ক-মহাসড়কগুলোতে একই সময়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করে। তাই দুর্ঘটনা, যান বিকল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে বিশৃঙ্খলা ও যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা বেড়ে যায়। এসব ব্যাপারে সতর্কতা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। মহাসড়কে কোনো মোটরযান বিকল হলে কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে, সেটি দ্রুত সরিয়ে ফেলা জরুরি, যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয়। এদিকে বিশেষ নজর রাখা দরকার।
ঈদের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। পরিবার-পরিজনসহ উৎসবের আনন্দ উপভোগের আশায় বাড়ি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনার শিকার মানুষের পরিবারে সীমাহীন শোক নেমে আসে। তাই সবাইকে সতর্কভাবে চলাচল করতে হবে। বাস ও লঞ্চে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধ করতে হবে। যানবাহনের চালকদের সতর্কভাবে যান চালানো উচিত।
ঈদুল ফিতরের উৎসব আনন্দময় হোক।
আমার বাঁশখালী ডটকম।
No comments:
Post a Comment