আমার বাঁশখালী.কম ডেক্স রিপোর্টার মোঃ রোবেল.
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ
শেষে এখন চলছে গণনা। আজ মঙ্গলবার ( ২৬ জুন) সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা
পর্যন্ত নতুন মেয়র নির্বাচনে ভোট দেন গাজীপুরবাসী। এই সিটিতে মোট
ভেটিকেন্দ্র ৪২৫টি। এই ভোটে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন কোনো
সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। কয়েকটি স্থানে ব্যালট ছিনতাইয়ের সময় পুলিশের সঙ্গে
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে নির্বাচন কমিশন কয়েকটি কেন্দ্র স্থগিত করেছে।
এর মধ্যে ২টি কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে।
নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে
১২৬৭ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র
প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫১১ ভোট।
সকাল আটটায় টঙ্গীর বছিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি
কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। ভোট দেয়া
শেষে এক সংবাদ সম্মেলেন তিনি অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ সদস্যরা পোশাকধারী এবং
সাদা পোশাকে এবং ছাত্রলীগ যুবলীগের কিছু ভাইয়েরা আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর
করেছে। পুলিশ গ্রেফতার করে এক বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে
ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠ নির্বাচন করার ব্যাপারে অনেক কথাই বলেছিলেন,
তিনি একটি কথাও রাখতে পারেননি। নূন্যতম বিবেক থাকলে তার এই পদ থেকে
অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। গাজীপুরে আজ কি ঘটেছে তা আল্লাহ দেখেছেন, আর
আপনারা সাংবাদিকরা সাক্ষী।’
সকাল ৯টার কিছু পরে কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ভোট দেন। পরে
দুপুরের দিকে টঙ্গীর আউচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন
করেন জাহাঙ্গীর। এ সময় তিনি বিএনপির প্রার্থীর সব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে
সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
গাজীপুর নির্বাচনে প্রতি দুইটি ওয়ার্ডে এক
প্লাটুন করে মোট ২৯ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করে। এদের মধ্যে ৭ প্লাটুন
কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায়, ১০ প্লাটুন টঙ্গী এলাকায় এবং ১২ প্লাটুন
জয়দেবপুর, বাসন চান্দনা চৌরাস্তা ও কাউলতিয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সমন্বয়ে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৮টি
মোবাইল ফোর্স, ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ গাজীপুর সিটি
করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ১৫ মে এই
সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ জটিলতাকে
কেন্দ্র করে হাইকোর্ট গত ৬ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের
জন্য স্থগিত করে আদেশ দেয়। এতে স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচনী সব ধরনের
কার্যক্রম।
পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম
কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী এবং
নির্বাচন কমিশন। শুনানি শেষে ওই স্থগিতাদেশ স্থগিত করে নির্বাচন অনুষ্ঠান
করার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জুন
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে দ্বিতীয়
দফায় ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের
কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর
পদে ৮৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি
সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে
পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন।
No comments:
Post a Comment