মেজবানে পদদলিত হয়ে ১০ সংখ্যালঘু নিহত নওফেল সন্দেহ ‘নাশকতা’, পুলিশ কমিশনার বললেন ‘নিছক দূর্ঘটনা’ - আমার বাঁশখালী ডটকম AmarBanskhali.Com

ব্রেকিং নিউজ

শীর্ষ বিজ্ঞাপন

নিউজ এর উপরে বিজ্ঞাপন

Tuesday, December 19, 2017

মেজবানে পদদলিত হয়ে ১০ সংখ্যালঘু নিহত নওফেল সন্দেহ ‘নাশকতা’, পুলিশ কমিশনার বললেন ‘নিছক দূর্ঘটনা’



.

আমার বাঁশখালী.কম ডেক্স:
প্রয়াত চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মেজবান খেতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ‘পরিকল্পিত নাশকতার’ সন্দেহ করছেন তার ছেলে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।

সোমবার রাতে তিনি গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে ওই দুপুরে রীমা কনভেসশন হলে সংঘটিত এ মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে তিনি  এ শঙ্কার কথা জানান।

এদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার পদদলীত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাকে নিছক দূর্ঘটনা দাবী করে নাশকতার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন।

ঘটনার সংবাদ পেয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত নিহতদের দেখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গেপড়া শোকগ্রস্ত মেয়রপুত্র  নওফেল বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে নাশকতার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। কেউ পরিকল্পিত ভাবেও এ ঘটনা ঘটাতে পারেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত করে বলা যাবে কী ঘটেছে।’



.

কুলখানিতে পদদলিত হয়ে দশ জনের মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘রীমা কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে নগরীর আরও ১৩টি কমিউনিটি সেন্টারে মেজবানের আয়োজন করেছিলাম। ওইসব সেন্টারের কোথাও সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়নি। এখানে কেন এ বিশৃঙ্খলা হলো আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি, যারা মারা গেছেন তারা পদদলিত হয়ে মারা যাননি। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে তারা মারা গেছেন। কমিউনিটি সেন্টারের গেট খুলে দিলে কেউ পেছন থেকে ধাক্কা দিলে তারা পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান, এ কারণে তাদের মৃত্যু হয়।’

স্বজনদের আহাজারিশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় কোনও ঘাটতি ছিল কিনা জানতে চাইলে নওফেল বলেন, ‘প্রতিটি কমিউনিটি সেন্টারে আমাদের এক থেকে দেড়শ স্বেচ্ছাসেবক ছিল। এ ঘটনায় আমাদের একজন স্বেচ্ছাসেবকও মারা গেছেন। পুলিশও সেখানে ছিল, সুতরাং শৃঙ্খলা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল। এটাই চিন্তার বিষয়। আমরা ঘটনা পেছনের কারণ জানার চেষ্টা করছি।’

আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করেছিলাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরপরও এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।’

এদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে মেজবান খেতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনা কোনও সহিংসতা নয় বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার। সোমবার দুর্ঘটনার পর রাতে সংবাদিকদের সিএমপি কমিশনার একথা জানান।

কমিশনার বলেন, ‘এ ঘটনার পেছনে অন্যকোনও কারণ ছিল না। তারা খেতে গিয়েছিলেন, কিন্তু হুড়োহুড়ির কারণে পদদলিত হয়ে কয়েকজন মারা গেছেন। কোনও সহিংসতা বা অন্য কিছু ছিল না। আগত ব্যক্তিরা হুড়োহুড়ি করে ঢুকতে গিয়ে পদদলিত হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪টি খাবারের ভেন্যুর প্রতিটির সামনেই পুলিশ সদস্য এবং আয়োজকদের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক দল ছিল। পুরো আয়োজন শৃঙ্খলার মধ্য দিয়েই পরিচালিত হচ্ছিল। কিন্তু রীমা কমিউনিটি সেন্টারের মধ্যবর্তী স্থান মূল রাস্তা থেকে একটু নিচে, ঢালু জায়গায়। সেখানে দু’টি গেট আছে। একটি গেট প্রবেশ পথ ও অন্যটি বের হওয়ার রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। বেলা দুইটার দিকে একটি ব্যাচ খাওয়া শেষ করে। এরপর নতুন করে আরেকটি ব্যাচকে খাওয়ার জন্য প্রবেশ গেট খুলে দিলে সবাই একসঙ্গে হুড়মুড় করে ঢোকার চেষ্টা করে। তখন ধাক্কা ও চাপ সামলাতে না পেরে অনেকে মাটিতে পড়ে যান। আর ঢালু পথ থাকায় নামার গতির কারণে অন্যরা তাদের ওপর উঠে পড়েন। এসময় পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।’

দুর্ঘটনার পর নিহতদের লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লাশ শনাক্ত করার পর নিহতদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার।

চট্টগ্রাম বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ও চমেক হাসপাতালের ডা. ফয়সল ইকবাল বলেন, ‘১০ জন মারা গেছেন। বাকিদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ এখনও হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ১০ জন।
সূত্র: পাঠকনিউজ

No comments:

Post a Comment

পোস্টের নীচে বিজ্ঞাপন