আমার বাঁশখালী.কম.ডেক্স রিপোর্টার মোঃ রোবেল.
মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় পটুয়াখালীর ইসহাকসহ পাঁচ আসামিকে
মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘ধর্ষণ
গুলির চাইতেও মারাত্মক’।
১৩ আগস্ট, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এমন মন্তব্য করেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম।
আল মালুম বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৪ মে নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে পটুয়াখালীতে।
পটুয়াখালীর আব্দুস সাত্তার প্যাদা ও সুলাইমান মৃধাসহ পাঁচজন মিলে নিরীহ
মানুষকে আটক করে অত্যন্ত পূর্বপরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং
বাড়ি-ঘর লুট করে। একইভাবে প্রায় ১০ থেকে ১৫টি বাড়ি তারা লুটপাট করে
অগ্নিসংযোগ করে। তারা রেপ ক্যাম্প (ধর্ষণ কেন্দ্র) গড়ে তোলে। আমরা বিভিন্ন
জায়গায় দেখেছি জার্মানির দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এরকম রেপ ক্যাম্প করা
হয়েছিল।
মাননীয় ট্রাইব্যুনাল সমগ্র বিষয় বিচার বিশ্লেষণ করে এই কথাই বলেছে যে,
‘এই ধরনের পূর্বপরিকল্পিত হত্যা এবং এই ধরনের ধর্ষণ গুলির চাইতেও মারাত্মক।
আমার এই মা-বোনেরা যতদিন বেঁচে থাকবে তাদের এই ক্ষত কোনোদিন মুছা যাবে না।
আমাদের এই স্বাধীনতায় এই অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। কাজেই অনারেবল
ট্রাইব্যুনাল সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে তাদের আটক নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও
ধর্ষণের মতো দুইটি অভিযোগে পাঁচজনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছেন।’
এদিন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পটুয়াখালীর ইসহাক সিকদারসহ পাঁচজনকে
মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃতাধীন তিন সদস্যের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
ইসহাক সিকদার ছাড়া অন্য চার আসামি হলেন- আব্দুল গণি হাওলাদার, আব্দুল
আওয়াল ওরফে মৌলবী আওয়াল, আব্দুস সাত্তার প্যাদা ও সুলাইমান মৃধা।
দুইটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে এ সাজা দেওয়া হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে
রায় পড়া শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। এ সময় আসামিরা ডকে বসে রায় পড়া শুনছিলেন।
তাদের সঙ্গে আসা ১১জন স্বজন আদালতের এজলাসের উপস্থিত ছিলেন। ১৫৯ পৃষ্ঠার
রায়ে মোট প্যারা ৪৪টি।
চলতি বছরের ৩০ মে এই পাঁচ আসামির মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়
ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। এরপর আজ সোমবার রায় ঘোষণা করলেন আদালত।
গত বছরের ৮ মার্চ এ মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরে এই পাঁচজনকেই গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের
বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ ছয় ধরনের
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
No comments:
Post a Comment