আমার বাঁশখালী.কম ডেক্স রিপোর্টার মোঃ রোবেল.
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা না
নেওয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের মধ্যে চিন্তাও তত বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের
তথ্যানুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ডিসেম্বরে।
সে হিসাবে এ সরকারের মেয়াদ আছে আর মাত্র তিন মাস। এর
মধ্যে আবার নির্বাচনকালীন সরকারও গঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য
দ্রুতগতিতে এগুচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি হিসাব মেলাতে পারছে না
নির্বাচনে তারা অংশ নেবে কি না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে
সরকারকে যখনই কোনো শর্ত দেয়, সরকার তখনই তা প্রত্যাখ্যান করে দেয়। বিএনপি
সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর দলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন সরকারকে চারটি
শর্তজুড়ে দেয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে। শর্তগুলো হচ্ছে- এক.
নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। দুই. সংসদ ভেঙে দিয়ে
নিরপেক্ষ সরকার গঠন। তিন. নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন। চার. নির্বাচনে সেনা
মোতায়েন করতে হবে। দলটির নেতারা বলছেন, এ চার দফা দাবি মানা না হলে দেশে
কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ নির্বাচন হতে দেবে না। আর আওয়ামী লীগ সাধারণ
সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নির্বাচনের ব্যাপারে
একাধিকবার সাংবাদিকদের বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কেউ যদি
নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তা হলে নির্বাচনের ট্রেন থেমে থাকবে না। বিএনপি
যদি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, আওয়ামী লীগের তাতে কিছু করার নেই।
এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি কি করবে তা হিসাব মেলাতে পারছে না। দলের
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান তারেক রহমান বিদেশে
নির্বাসন জীবন কাটাচ্ছেন, দলের অনেক সিনিয়র নেতা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, তারা
ঠিকমতো চলাফেরাও করতে পারছেন না।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতারা যেমন দলের যে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত জানার জন্য দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে
তাকিয়ে থাকেন, তেমনই বিএনপির যে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকেন। খালেদা জিয়া কারাগারে
থাকায় বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেও কে কোথায় থেকে নির্বাচন করবে, জোটের সঙ্গে আসন
ভাগাভাগি নিয়ে হিসাব, জাতীয় ঐক্যে হলে তখন নতুন করে আরেক হিসাব। এসব
পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বিএনপিতে মুক্ত খালেদা জিয়ার বিকল্প নেই। এমন
পরিস্থিতিতে বিএনপি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা এই মুহূর্তে বলা
কঠিন। দলের চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির একাধিক নেতা বিভিন্ন
সময়ে বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবেন না। আবার খালেদা
জিয়া নির্বাচনের আগে আইনগত প্রক্রিয়ায় মুক্তি পাবেন সেই ভরসাও ক্ষীণ।
অন্যদিকে চলতি মাসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হতে পারে। সেই রায়ে
বিএনপির কয়েকজন নেতার দণ্ড হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি বিষয়গুলো
গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
গত ২৪ আগস্ট সাংবাদিকদের বলেছেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে বিএনপি
সরাসরি জড়িত। এই মামলার রায় হলে তারা (বিএনপি) নতুন করে রাজনৈতিক সংকটে
পড়বে। সেপ্টেম্বরে (চলতি মাসে) রায় হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। এ জন্য সবাই
খুশি। বিএনপি কেবল অখুশি।
আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি তখনো
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, এখনো জানায়। ওই ঘটনার জন্য দায়ী প্রকৃত
অপরাধীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় বিএনপি। কারণ, আমরাও চাই এমন
নির্মম অরাজনৈতিক ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীর আরও বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে সরকারপ্রধান
থেকে শুরু করে আইনমন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীনদের দায়িত্বশীল নেতারা
যে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা কখনো কাম্য হতে পারে না। সরকার প্রতিপক্ষ
বিএনপিকে ‘দমন’ ও ‘দুর্বল’ করার হাতিয়ার হিসেবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
মামলার গোটা বিষয়টিকে ব্যবহার করছে। নেট সূত্র....
No comments:
Post a Comment